মিলটন খন্দকার: [২] গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ থেকে পালিয়ে যাওয়ার দুইদিন পর শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি আবু বকর সিদ্দিকের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কারাগার পরিদর্শন করে প্রথম দিনের তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছেন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন, ডিআইজি প্রিজন মো. তৌহিদুল ইসলাম এবং মানিকগঞ্জ কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান।
[৩] তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন শনিবার বিকালে কারা ফটকের সামনে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলছে। গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ আমরা তদন্তের প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ করেছি। বাকি কার্যক্রম খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে আপনারা জানতে পারবেন। নতুন করে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তদন্ত কমিটি এব্যাপারে সুপারিশ করবে। আমরা তদন্ত করছি, এ ঘটনায় কারা দায়ী, কিভাবে পালিয়ে গেল এগুলো বের করার চেষ্টা করছি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলার সুযোগ নেই।’
[৪] এদিকে কারাগার থেকে কয়েদি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার পরপরই গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ শরিফুর রহমান, কোনাবাড়ি থানার ওসি মোঃ এমদাদ হোসেন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
[৫] কারা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে কোনাবাড়ি থানার ওসি জানান, কয়েদি আবু বকর সিদ্দিক এর আগেও কাশিমপুর কারাগার থেকে ২০১৫ সালের ১৩ মে আত্মগোপন করে ছিলেন। তখন তিনি কারাগারের সেল এলাকায় সেফটি ট্যাংকির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। পরদিন তাঁকে একটি ট্যাংকির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই ঘটনারপর কিছু দিন তাঁকে কারাগারে শিকল পরিয়ে রাখা হতো। এতে আবু বকর মানসিকভাবে কিছুটা বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে শিকলমুক্ত করে দেয়া হয়। কারা চত্ত্বরে তিনি অন্য বন্দিদের সঙ্গে কাজকর্ম করতেন। বৃহস্পতিবারও তিনি অন্য কারাবন্দিদের সঙ্গে মুক্ত অবস্থায় ছিলেন। এদিকে কয়েদি পালিয়ে যাওয়ার দুই দিনেরও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ও জেলারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
[৬] উল্লেখ্য, আবু বকর সিদ্দিক ২০১১ সালে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফাঁসির আসামি হিসেবে কাশিমপুর কারাগারে আসেন। ২০১২ সালের ২৭ জুলাই তাঁর সাজা সংশোধন করে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন উচ্চ আদালত।
[৭] এদিকে কয়েদি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কারাগারের প্রধান কারারক্ষী, সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও সাত কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আরো ৫ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে শুক্রবার বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।