শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট, ২০২০, ০১:৩০ রাত
আপডেট : ০৭ আগস্ট, ২০২০, ০১:৩০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজিয়া সুলতানা জেনি: ঈদের টেলিফিল্ম ‘ভিকটিম’ : একটি সমালোচনা

রাজিয়া সুলতানা জেনি: ভিকটিম নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। সেই অর্থে ব্যাপারটা শুভ সংবাদ। দর্শক বাংলা নাটক দেখতে আগ্রহী হচ্ছে। অ্যাট লিস্ট ভাঁড়ামো টাইপ নাটক থেকে বেরিয়ে এসে, কন্টেন্ট সমৃদ্ধ নাটক দেখতে আগ্রহী হচ্ছে। আর আশফাক নিপুণ সম্ভবত ‘ভিন্ন ধাঁচের নাটক বানান’ টাইপ নিজের একটা আইডেন্টিটি তৈরি করে ফেলেছেন। সেটাও বেশ ভালো একটা ব্যাপার। কমবেশি এই কারণেই, ভিকটিম নাটকটা দেখতে বসলাম। যথারীতি ডিসাপয়েন্টেড হলাম। চমৎকার একটা সাবজেক্ট নিয়ে খুব কম রিসার্চে তৈরি করা একটা নাটক/টেলিফিল্ম। পজেটিভ ব্যাপার বলতে ছিলো অপি করিমের অভিনয়। কিছু জায়গায় ওভার অ্যাক্টিং লাগলেও, ভালো করেছেন। নিশো মোটামুটি। তবে তার ক্যারেক্টার পুরোপুরি ডিফাইন্ড ছিলো না, হতে পারে রাইটার সেটাই চেয়েছিলেন, হতে পারে নিশো নিজে ক্যারেক্টারটা কনসিভ করতে পারেননি। এনিওয়ে, নট ব্যাড।

আমি আসলে আলোচনা করতে চাইছে, স্ক্রিনপ্লে নিয়ে। নির্মাতা নিজেই স্ক্রিনপ্লে লিখেছেন এবং বেশ বাজে ছিল সেই স্ক্রিনপ্লে। কেন, সেই ব্যাখ্যার আগে একটু আলাপ করতে চাই, স্ক্রিনপ্লের কিছু বেসিক রুল নিয়ে। স্ক্রিনপ্লের প্রথম রুল হচ্ছে, রিমেমবার দ্য রুল, দেয়ার ইজ নো রুল। স্ক্রিনপ্লে লেখার সেই অর্থে কোনো নিয়ম নাই, একথাও যেমন ঠিক আবার এটাও ঠিক, স্ক্রিনপ্লে লেখার গ্রামার কেউ ভায়োলেট করলে, আর সেটা নান্দনিকভাবে করতে না পারলে, খুব বেশি চোখে লাগে। তাই স্ক্রিনপ্লে লেখার দ্বিতীয় রুল হচ্ছে, রুল যদি ভাঙতেই চাও, তবে আগে রুলটা শিখে নাও। এখানেই ছিল ভিকটিম এর মূল দুর্বলতা।

প্রথমত এ ধরনের নেগেটিভ সমালোচনা লিখলে প্রথম রিয়াকশান আসে, ‘ব্যাটা তুই কি জানিস?’ কিংবা ‘আগে এরকম একটা নাটক লিখে দেখা’। এধরনের কথার আসলে কোন উত্তর হয় না। পৃথিবীর যত ভালো সিনেমা সমালোচক, তাঁরা খুব ভালো ফিল্মমেকার, এমন কিন্তু না। যেকারনে অনেক সময় বলা হয়, যে ফিল্মমেকার হতে পারে না, সেই হয় সমালোচক। যে কবিতা লিখতে পারে না, সেই হয়, অ্যান্ড গোস অন। তারপরও লিখছি, কারণ আই উইশ আশফাক নিপুণ বেস্ট অফ লাক। তিনি আরও ভালো করুন, এটাই প্রত্যাশা। আর সেকারণেই এই ইনপুট। যদি তিনি এই লেখাটা পড়েন,

আর এখান থেকে কিছু গ্রহণ করেন, এই আশায়। যদিও জানি, ব্যাপারটা ভেরি আনলাইকলি। এনিওয়ে, লেটস স্টার্ট। স্ক্রিনপ্লের সাধারনত তিনটি অংশ থাকে, অ্যাক্ট ওয়ান, অ্যাক্ট টু আর অ্যাক্ট থ্রি। কোন অংশের কী কাজ, কোন অংশ কতোক্ষণ ধরে চলবে, এই নিয়ে আলোচনা এই মুহূর্তে করতে চাইছি না। তবে রুল হচ্ছে, অ্যাক্ট ওয়ানে, ‘হুক’ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হয়। ‘হুক’ অর্থাৎ, দর্শককে আটকে ফেলা। আর সেটা করতে হয় নাটক শুরুর একেবারে প্রথম দিকেই। রুল অফ থাম্ব হচ্ছে, এক থেকে দেড় ঘণ্টার কাহিনি চিত্রে, বড় জোর পাঁচ থেকে দশ মিনিট। ভিকটিম টেলিফিল্মে, হুকটা এসেছে চব্বিশ মিনিটের মাথায়। আই থিংক, টু লেট টু কাম। এর আগে যে দৃশ্যগুলো দেখানো হয়েছে, সেগুলো প্রয়োজনীয় ছিলো, তারপরও, অনেকগুলোই কমিয়ে আনা যেতো। কিংবা হুক এর পরে দেখানো যেতো। ব্যাপারটা চোখে লেগেছে।

দ্বিতীয় যে ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু লেগেছে, সেটা কমবেশি সব বাংলাদেশী ডিরেক্টরই করে থাকেন, সেটা হচ্ছে ভিজুয়ালের ব্যাবহার না করা। ‘ফেসবুকে অনেকে অনেক কিছু বলছে’ এই ডায়ালগ যে ইমপ্যাক্ট দেয়, তার চেয়ে অনেক বেশি ইমপ্যাক্ট দেয় একটা স্ট্যাটাসের ক্লোজ শট। ব্যাপারটা অবশ্যই আশফাক নিপুণের কাছে আশা করি। টিভি নাটক থিয়েটার না। এখানে দারুণ শক্তিশালী একটি প্রপস আপনার হাতে আছে, ক্যামেরা। এর ব্যাবহারের ঘাটতি খুবই চোখে লাগে। তৃতীয় যে ব্যাপারটা খারাপ লেগেছে, তা হচ্ছে ‘মিঃ টু’ ব্যাপারটা নিয়ে পর্যাপ্ত রিসার্চ না করা। ঠিক কিভাবে হ্যারাসমেন্ট হয়, সে নিয়ে লেখক খুব বেশি ক্লিয়ার ছিলেন বলে মনে হয়নি। ‘হাত ধরা’ একটা উদাহরণেই আঁটকে থেকেছেন লেখক। এমন একটা টপিক নিয়ে নাটক লিখতে গিয়ে, ব্যাপারটা অনভিপ্রেত। যদিও টপিকটা বেশ বড়, ছোট্ট একটা নাটকে সামলানো টাফ, তারপরও, একেবারে এড়িয়ে যাওয়াটাও খুব ভালো লাগেনি।

পজিটিভ দিকের ভেতরে, নাটকের গতি প্রথমদিকে মন্থর হলেও, পরের দিকে গতি ফিরে পায়। অপ্রয়োজনীয় দৃশ্য বেশ অনেকগুলো থাকলেও, লেখক চেষ্টা করেছেন, প্রায় সবগুলোর প্রয়োজনীয়তা স্টাবলিস করার। ডায়ালগ, বেশ কিছু জায়গায়, দারুণ। কোথাও কোথাও বিলো অ্যাভারেজ। এন্ডিং, খারাপ লাগেনি। সব মিলিয়ে একটা ভালো প্রচেষ্টা। তবে, এক্সপেক্টেশানের বার যেহেতু উনি উঁচু করে ফেলেছেন, তাই উনার কাছ থেকে আরও নির্ভুল নাটক আশা করছি। শুভ কামনা। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়