আবদুল ওহাব, বগুড়া প্রতিনিধি : [২] বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁঝ থামতেই শুরু হয়েছে মরিচের সীমাহীন ঝাল। স্মরণকালের সর্বোচ্চ দরে বিক্রি হচ্ছে এখন কাঁচামরিচ। হঠাৎ করেই বাজারে দাম আকাশ চুম্বি হওয়ায় মানুষের নাভীশ্বাস উঠেছে। ফলে করোনার এই দুর্যোগে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে আরও দুর্বিসহ। তবে এর কারন হিসেবে কাঁচা মরিচের আমদানী কম ও পথে ঘাটে অতিমাত্রায় খাজনা আদায়কে দোষছেন ব্যাপারীরা। পাইকারী দরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
[৩] বগুড়ার শাজাহানপুর, শেরপুর, গাবতলী ও মহাস্থানের হাট-বাজারগুলোতে দেখাগেছে, পাইকারী দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। পাশেই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি। পাইকারী দরের চেয়ে খুচরা বাজারে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি করার কারন জানতে চাইলে দোকানীরা যুক্তি সংগত কোনো কারন জানাতে পারেনি। তবে পথে ঘাটে ও হাটে বাজারে খাজনা, পরিমাণের তুলনায় বেশি বলে জানিয়েছেন অনেকে। এছাড়াও দোকানীরা কেউ জানে না সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রকৃতপক্ষে কোনো দোকানীর সঠিক খাজনা কত টাকা। ইজারাদাররা যা চান তাই দিতে বাধ্য হয় দোকানীরা।
[৪] বিক্রেতারা বলছেন, একে তো কাঁচামরিচ সহ পণ্যের আমদানী কম। তারপর আবার পথেঘাটে ইচ্ছেমত ইজারাদারদের খাজনা আদায় বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। খাজনা ও টোল আদায়ের সাইনবোর্ড থাকার বিধান থাকলেও একটি বাজারেও তা মানা হয় না। কৃষক জমিতে ফসল বিক্রি করলেও হাটের ইজারাদারের লোকজন পথে ঘাটে থেকে তাদের কাছ থেকে প্রতিটি বস্তার জন্য ৪০-৫০ টাকা করে নেয়। এরপরও রয়েছে সড়কে পরিবহনে টোল আদায়। তারা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, সীমিতমূল্যে হাটবাজার ইজারা দেয়া হলেও খাজনার পরিমাণ সীমাহীন। প্রতিটি ছোট ছোট দোকানীর কাছ থেকেও ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে খাজনা নেওয়া হয়।
[৫] আর ক্রেতা সাধারণ বলছেন, ৩‘শ-৪‘শ টাকা কেজি দামের মরিচ ধনীরা ক্রয় করতে পারলেও দরিদ্রদের ক্রয় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। করোনায় একে তো আয় রোজগার কম, তারপর আবার অস্থিতিশীল বাজার তাদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে।
[৬] বাজার করতে আসা লোকজন বলেন, ইচ্ছেমত খাজনা আদায়ের জন্যই সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়। তাই কোন দোকানী জানেনা প্রকৃতপক্ষে সরকারিভাবে খাজনা কতো টাকা। অথচ এই সাইনবোর্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না কেউ। তাই ইজারাদারদের নিয়ন্ত্রণ, বাজার দরের তদারকি এবং পথে ঘাটে খাজনার নামে চাদাবাজি বন্ধ করতে না পারলে বাজার দর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। বিধায় করোনার এ দুর্যোগে মানুষের জীবন আরও দুর্বিসহ যাতে না হয় সে লক্ষ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া একান্ত জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন জনসাধারণ। সম্পাদনা : হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :