আসিফুজ্জামান পৃথিল : [২] ভয়াবহ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৭৮ জন এবং আহত চার হাজারেরও বেশি । বৈরুত বন্দরের কাছে ওই বিস্ফোরণে অন্তত ৭৩ জন নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসান। এছাড়া আড়াই হাজারের বেশি লোক আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে ভিন্ন তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা, তারা বলছে নিহতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। গ্লোবাল নিউজ, আলজাজিরা, আরব নিউজ
[৩] মঙ্গলবার (০৪ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বৈরুতের সমুদ্র বন্দর এলাকায় এই বিস্ফোরণে সৃষ্ট শকওয়েভে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কয়েকশ ভবনও। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভেঙে গুড়ো হয়ে গেছে জানালার কাঁচ। বিস্ফোরণের কারণ প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।নিহতদের মধ্যে রাজনৈতিক দল কাতায়েবের মহাসচিব নাজার নাজারিয়ানও রয়েছেন। বিস্ফোরণের সময় নিজের কার্যালয়ে ছিলেন নাজারিয়ান। গুরুতর আহত অবস্থায় মারা যান তিনি।
[৪] আল জাজিরার ভিডিওতে দেখা যায় সমুদ্র বন্দর এলাকা থেকে বের হওয়া ঘন-কালো ধোঁয়ায় আকাশ একেবারে ঢেকে গেছে। এই এলাকায় প্রচুর ওয়ারহাউজ ও গুদাম রয়েছে। ভিডিওটিতে আরো দেখা যায়, কমলারঙের বিশাল এক আগুন আকাশ বেয়ে উঠছে। ফলে তৈরি হচ্ছে ব্যাঙের ছাতা আকৃতির শকওয়েভ।
[৫] সঙ্গে সঙ্গে শহরের বিভিন্ন দোকান ও ভবনের কাঁচের দরজা জানালা ভেঙে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায় কবজা থেকে ছুটে পড়ছে দরজা ও জানালা।
[৬] সরকারি সূত্রগুলো বলছে, বিস্ফোরণেরর কয়েক কিলোমিটার ব্যাসার্ধ্য মধ্যে থাকা সকল দালান ভীষণভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
[৭] আলজাজিরার বৈরুত প্রতিনীধি জিনিয়া খোদর বলেন, ‘এখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার স্থান থেকে আমি এক কিলোমিটার দূরে সড়কে হাঁটছি। চারদিকে ভাঙা কাঁচের টুকরো পড়ে রয়েছে। এখানে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’’
[৮] বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান আব্বৌদ জানিয়েছেন, পৌরসভার অন্তত ১০ জন দমকলকর্মী নিখোঁজ রয়েছে। তিনি বলেছেন, এই বিস্ফোরণ হিরোশিমা ও নাগাসাকির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন সেনাবাহিনীকে বৈরুতের বিস্ফোরণের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টহলের নির্দেশ দিয়েছেন। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বিস্ফোরণের ঘটনায় বুধবার জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছেন।
[০৯] কিছুদিন যাবত ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লার সম্মুখযুদ্ধ চলছিল সীমান্তে। এরই জেরে দেশ দুটির সম্পর্ক আবারো উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
[১০] রাজধানীর বহু হাসপাতাল জুড়ে শতাধিক আহতদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। জরুরি বিভাগে ছিল উপচে পড়া ভিড়। শহরের অন্যতম প্রধান হাসপাতাল আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত মেডিক্যাল সেন্টারের জরুরি বিভাগে আহতদের জায়গা না পেয়ে অন্য হাসপাতালে যেতে হয়েছে।লেবাননের রেড ক্রস, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও রাজনীতিকরা হাসপাতালগুলোতে আহত ব্যক্তিদের রক্ত দিতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান।
আপনার মতামত লিখুন :