বাশার নূরু:[২] দেশের তুলার চাহিদা মেটাতে উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ‘তুলার গবেষণা উন্নয়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তুলার আমদানি কমবে, এতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য জানায়।
[৩] প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উচ্চফলনশীল, জলবায়ু অভিযোজনশীল, স্বল্পমেয়াদি, খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল এবং মানসম্পন্ন আঁশ উৎপাদনকারী জাতের উন্নয়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পাদনে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতা বাড়বে। কৃষকের আয় বাড়ানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনেও সহায়ক হবে বলে মনে করে কৃষি মন্ত্রণালয়।
[৪] এছাড়া তুলার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য উচ্চফলনশীল ও প্রতিক‚লতা সহনশীল জাতের উন্নয়ন, আঁশের গুণগত মানের উন্নতি সাধন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খায় এমন লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর, তুলার জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, উচ্চফলনশীল, খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল এবং মানসম্পন্ন আঁশ উৎপাদনকারী জাতের উন্নয়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং জলবায়ু পরিবর্তনশীল এলাকায় তুলা চাষ স¤প্রসারণের জন্য জলবায়ু অভিযোজনশীল তুলার জাত এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি হস্তান্তরই হবে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
[৫] খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম এই সাত বিভাগের ৪২টি জেলার ১৩৪টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। জেলাগুলো হচ্ছে-খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, পাবনা, রংপুর, গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঢাকা মেট্রোপলিটন, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান।
[৬] বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে প্রকল্প ব্যয়ের মোট ৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার পুরোটাই অর্থায়ন করবে। প্রকল্পটি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দবিহীনভাবে সংযুক্ত নতুন অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
[৭] প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ৩০০টি অনফার্ম ট্রায়াল বা আদর্শ ট্রায়ালসহ ৫ থেকে ৭ টন হাইব্রিড তুলা বীজ উৎপাদন করা হবে। ৩০০ জন বৈজ্ঞানিক সহকারী, ১ হাজার ৮০০ জন স¤প্রসারণের সঙ্গে যুক্ত জনবল, ১ হাজার ২০০ আদর্শ তুলা চাষি, ১৫ হাজার জন তালিকাভুক্ত চাষির প্রশিক্ষণ, ৩০০ জন কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
[৮] সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় তুলা একটি অগ্রাধিকার প্রাপ্ত গবেষণা ক্ষেত্র হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে বেশ কয়েকটি ফসলের মধ্যে তুলা ফসলের গবেষণার ওপর জোর দেওয়া হবে মর্মেও ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
[৯]বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় কাপড়ের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। দেশের কারখানায় তুলার চাহিদার ৯৭ শতাংশ আমদানি করে আনতে হয়। ভারত, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকে এই তুলা আমদানি করা হয়।
বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :