ডেস্ক নিউজ: [২] প্রায় একশো বাড়ি গেছি। কেউ দিছে, কেউ কইছে মোগো দেওয়া শ্যাষ ওইয়া গ্যাছে। সকাল ওইতে এই পর্যন্ত (দুপুর সোয়া দুইটা) দ্যাড় কেজির মতো পাইছি। কিন্যা খাওয়ার কায়দা নাই। আরো কয় বাড়ি যামু। দেহি আরোকটু পাই কিনা। আবেগাপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলেন হতদরিদ্র বেগম বিবি (৫৫)। সূত্র: কালের কণ্ঠ
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের জিলবুনিয়া গ্রামে সুলতান খানের স্ত্রী বেগম বিবি জানান, ইদে ছোট মেয়ে-জামাই আসবে বাড়িতে। কোরবানি দেওয়া তো দূরের কথা, মাংস কিনে খাওয়ানোর মতো সামর্থও নেই তাদের। মেয়ে-জামাইর পাতে এক টুকরো মাংস যাতে তুলে দিতে পারেন সেই আশায় তিনি ইদের দিন সকাল সকালই বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন মাংস সংগ্রহ করতে। দুপুর সোয়া দুইটা পর্যন্ত প্রায় ১০০ বাড়ি ঘুরে পেয়েছেন মাত্র দেড় কেজি মাংস। খর রৌদ্রের মধ্যে বিত্তবানদের দারে দারে ঘুরে ক্লান্ত এই বৃদ্ধা অশ্রুসজল চোখে তার এই আবেগঘন কথাগুলো বলছিলেন।
স্বামী সুলতান খান (৭০) এক সময় সুন্দরবনে কাঠ কাটতে যেতেন (বাওয়ালী) অন্যের নৌকায়। প্রায় ২০ বছর আগে বাঘের মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছেন। সেই থেকে আর বনে যাননি। নানা রোগশোকে এখন তার শরীর আর চলে না। কানেও শুনতে পান না। কোনো কাজও করতে পারেন না।
বেগম বিবি জানান, তার তিন ছেলে, তিন মেয়ে। ছোট ছেলে মইন উদ্দিন মধু সাত বছর আগে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। মেঝো ছেলে বাদল খান ভ্যান চালিয়ে যা পায় তা দিয়ে স্ত্রী-দুই সন্তান নিয়ে চলতেই কষ্ট হয়। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজন থাকেন বড় ছেলে নূরমিয়া খানের সংসারে। নূরমিয়া মাঝে মাঝে নদীতে মাছ ধরেন। তার একটি জেলে কার্ড আছে। তাতে ৪০ কেজি করে চাল পায় মাসে। বর্তমানে কৃষিশ্রমিক। এই সামন্য উপার্জনে স্ত্রী, তিন ছেলে-মেয়েসহ সাত জনের বিশাল বোঝা তার মাথায়। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :