ডেস্ক রিপোর্ট : একজন আল্লাহর অলি বলেন, “কিছু লোক আছে যারা বলে আল্লাহর ক্ষমা ও দয়া অসীম। যদি কেউ এদের বলে, ‘আল্লাহ এতই মহান ও উদার হলে তোমরা ঘরে বসে থাকো না কেন? আল্লাহ ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করে দেবেন এই বিশ্বাস রাখতে পারো না কেন?’
.
তখন তারা মুখ ফিরিয়ে বলে, ‘ভরণ-পোষণ শুধু উপার্জনের মাধ্যমেই পাওয়া যায়।’
.
তাদের দাবীর উত্তরে একইভাবে এই কথাই বলা উচিত, ‘মুক্তি মিলতে পারে কেবল তাকওয়ার মাধ্যমে। শুধু আল্লাহর রহমতের ওপর ভরসা করে থাকার মধ্যে নয়।”
.
‘এখন গুনাহ করে নেই, পরে তওবা করে নিবো নে’- এই মেন্টালিটি নিয়ে যারা চলে তাদের সম্পর্কে ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ.) লিখেছেন,
.
“গুনাহ মানুষের ইচ্ছাশক্তিকে দুর্বল করে ফেলে। গুনাহ্ করার আকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে দেয়। কমিয়ে দেয় তওবা করার ইচ্ছাকে। একসময় তার আর তওবা করার কোন ইচ্ছাই থাকে না।... (আর তওবা করলেও দায়সারাগোছের তওবা করে) সে ক্ষমা চায়, অনুশোচনা প্রকাশ করে। কিন্তু সেটা মুখের ঠোঁট নাড়ানো ছাড়া আর কিছুই না। তার তওবা তো মিথ্যুকদের তওবার মতো। (যে মুখে তওবা করলেও) ভেতরে ভেতরে ঠিকই গুনাহ করার ধান্দায় থাকে। তার ইচ্ছা থাকে সে গুনাহের ওপরই অটল থাকার।” (আল-জাওয়াবুল কাফি, ১/৫৬)
.
আবার, আমরা অনেকেই ইচ্ছামত গুনাহ করে ভাবি, আল্লাহ তো ক্ষমা করে দেবেন-ই। এ সম্পর্কে ইবনুল কায়্যিম (রহ.) আরো লিখেছেন,
.
“কিছু জাহেল লোক শুধু আল্লাহর দয়া আর ক্ষমার আশা নিয়েই বসে থাকে। তারা তাঁর দেয়া বিধি-নিষেধের কোনো তোয়াক্কা করে না। এরা ভুলে যায়, আল্লাহ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর। তিনি খারাপ লোকদের ওপর তাঁর ক্রোধ সরিয়ে ফেলেন না। যে আল্লাহর রহমতের আশা করে গুনাহ করতেই থাকে, সে তো একটা গোঁয়ার।
.
একজন আলেম বলেন, ‘যদি আল্লাহ তিন দিরহাম চুরি করার জন্য দুনিয়াতেই তোমার হাত কাটার নির্দেশ দেন, তাহলে আখিরাতে তার আযাব থেকে নিজেকে নিরাপদ ভেবো না।’
.
আল হাসান (রহ.)-কে একবার বলা হলো, ‘আমরা আপনাকে প্রচুর কাঁদতে দেখি।’ উনি জবাব দিলেন, ‘আমার ভয় হয় আল্লাহ আমাকে জাহান্নামে ছুড়ে ফেলবেন আর আমাকে একটুও গুরুত্ব দেবেন না।’
.
তিনি আরো বলতেন, “কিছু লোক আল্লাহর ক্ষমার অভিলাষ করে তওবা না করেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়। তারা বলতো, ‘আমি আমার রবের ব্যাপারে ভালো ধারণা রাখি।’ কিন্তু সে আসলে মিথ্যা বলছে। যদি সে সত্যিই আল্লাহর ব্যাপারে ভালো ধারণা রাখত, তবে ভালো ভালো কাজ করত’।” (আল-জাওয়াবুল কাফি, ১/২৮)
.
আমাদের সালাফদের মধ্যে একজন প্রচুর ইবাদত করতেন। এমনকি তার বুকের পাঁজর দেখা যেতো। এক লোক তাকে যেয়ে বলল, “আল্লাহর দয়া তো অসীম (এতো কষ্ট কেন করছেন? একটু রিল্যাক্স করুন)।” উনি জবাব দিলেন, “ঠিক বলেছেন। যদি তাঁর দয়া অসীম না হতো, তবে আমাদেরকে আমাদের ইবাদতের জন্যেই ধ্বংস করে দিতেন। গুনাহের কথা তো বাদই দিলাম।”
সংগ্রহিত