মোঃ বশির উদ্দিন, ডেমরা প্রতিনিধি: [২] ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর ডেমরার দু’টি পশুর হাটেই গতবারের তুলনায় গরু কম, ক্রেতাও তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। এখানকার ঐতিহ্যবাহী সারুলিয়া গরুর হাট ও আমুলিয়া মডেল টাউনের গরুর হাটে কর্তৃপক্ষরা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনতা অনেক কম। এবার অন্তত ৩০ শতাংশ লোকসানের আশংকা করছেন দুই ইজারাদার। এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধা পর্যন্ত হাটে ক্রেতাদের পদচারনা লক্ষ্য করা গেছে কম। আবার দাম কম হবে এ আশংকায়ং ক্রেতারা কিনেছেন কম। অনেকে আবার খুববেশি দামাদামি না করে করোনার ভয়ে দদ্রুত গরু কিনে চলে যাচ্ছেন।
[৩] সরেজমিন দেখা গেছে, ডেমরার ওই দু’টি হাটেই প্রতিবছরের ন্যায় এবারও টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা,কুষ্টিয়া, যশোর, ঝিনাইদহ,মুন্সিগঞ্জসহ দেশেরে বিভিন্ন জেলা থেকে গরু এসেছে। তবে গরু তুলনামূলক কম। এদিকে বেচাবিক্রি এখনো পুরোদমে জমে ওঠেনি। হাটে ক্রেতাও কম। যারা হাটে আসছনে তারা ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু দেখছেন বেশি। কেউ কেউ কিনছেনও। এবার ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। গত ৩ দিন গরু কিনে ক্রেতারা খুশি ছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ডেমরায় গরুর দাম কিছুটা বাড়লেও গতবারের তুলনায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ কম। তাই বিক্রেতারা ভাল দাম পাচ্ছেননা বলে হতাশ ব্যবসায়ী ও খামারিরা। করোনা ও বন্যার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি।
[৪] স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমুলিয়া হাটকে সর্বাধুনিকভাবে সাজানো হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনতা অনেকটাই কম দেখা গেছে। হাটে প্রবেশের শুরুতেই স্থাপন করা হয়েছে জীবানুমুক্তরণ টানেল, রয়েছে পশু চিকিৎসক, জাল টাকা সনাক্তকরণের বুথ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের জন্য কন্ট্রোলরুম। এছাড়াও বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা পেতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাটে তাবু টানানো হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে গাড়ি পার্কিং সুবিধা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা আধুনিক থাকলেও হাটে ক্রেতা তুলনামূলক কম। এ বছর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ লোকসান গুনতে হবে জানিয়েছেন আমুলিয়া পশুর হাটের ইজারাদার মোঃ আহসান উল্ল্যাহ বেপারি।
[৫] তিনি বলেন, করোনাকালীন ক্রেতা-বিক্রেতা ও এলাকাবাসীর সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে হাটকে আধুনিকভাবে সাজানো হয়েছে। এতে ব্যয়ভারও বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু হাটে এবার পশুর সংখ্যা তুলনামূলক কম, সেই সঙ্গে ক্রেতাও বৃহস্পতিবার সন্ধা পর্যন্ত কম দেখা গেছে। পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে করোনায় অর্থনৈতিকভাবে মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে এবার অনেকেই কোরবানি নাও দিতে পারে। তাই সব খরচ বাদ দিয়ে এবার লোকসান গুনতেই হবে।
[৬] সারুলিয়া গরুর হাটের ইজারাদার মোঃ আরিফুর রহমান খাঁন বলেন, গতবারের তুলনায় হাটে গরু-ছাগল অনেকটাই কম। বিক্রিও সে অনুযায়ী কম। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটকে সাজাতেও খরচ বেশি হয়েছে। প্রথম দিকে ৩ লাখ টাকার বড় গরুগুলো আড়াই লাখ টাকা হাঁকিয়েছেন বিক্রেতারা। এক লাখ টাকার গরু ৮০ থেকে ৮৫/৯০ হাজার টাকা বিক্রি হলেও ক্রেতা কম। আর বাকি আছে মাত্র ১ দিন। এ বছর লোকসান গুনতেই হবে আমাদের।
[৭] মো.সাইফুল ইসলাম নামে আমুলিয়া হাটে আসা এক ক্রেতা বলেন, হাটে এসে ভালই লাগছে, কিন্তু গরুর দাম খানিকটা বেশি চাইছেন বিক্রেতারা, তাছাড়া অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও খারাপ বলে গরু দামে বনছেনা। তবে বৃহস্পতিবার গরু না কিনতে পারলেও চাঁদ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করব।
[৮] এ বিষয়ে সারুলিয়া হাটে আসা আফসানা হালিম নামে এক ভদ্র মহিলা বলেন, গতবারের তুলনায় এ হাটে গরু কম বলে বিক্রেতারা দাম বেশি হাঁকাচ্ছেন। গত দু’দিন আগেও গতবারের তুলনায় গরুর দাম কম ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা কম ছিল। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ