হাবিবুর রহমান : [২] নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা,বাইশারী ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নসহ পুরো রামুর বৃহত্তর গর্জনিয়া বাজারে কুরবানীর পশুর হাট জমে উঠেছে। এখানে কোন করোনার ভয় নেই বললে চলে। সামাজিক দুরত্বতো নাই, কারোও মুখে মাক্স দেখা যেন আমাবস্যার চাদেঁর মতো বলেছেন সচেতন মহল। এই ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারী জরুরী। তবে, বাজারে ছোট দেশি জাতের গরুর চাহিদা থাকায় ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বিপাকে পড়েছে খামারীরা।
[৩] সরেজমিনে এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে গ্রামের পালিত ছোট এবং মাঝারী বিপুল সংখ্যক গরু রয়েছে। তবে গরুর তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় পশু বিক্রেতাদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ির ব্যবসায়ী হামিদ ও তিতার পাড়ার ব্যবসায়ী বেলাল জানান, দেশে করোনা দুর্যোগে মানুষের অভাব অনটনের কারণে মন্দাভাব দেখা দেওয়ায় বড় গরু কেনার মত ক্রেতার বড়ই অভাব। তাই ছোট ও মাঝারী গরু বিক্রি হচ্ছে বেশী। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর খুবই অপ্রতুল্য।
[৪] আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) সাপ্তাহিক বাজার রামু উপজেলার বৃহত্তর গর্জনিয়া বাজার। বরাবরের মতো গেল সোমবারও এ বাজারে ঘুরে দেখা গেছে গরু,মহিষ, ভেড়া, ভুষ ইত্যাদি বাজারটিতে চোখে পড়ার মত হলেও তুলনামূলক বিক্রি কম হওয়ায় বিক্রেতারা হতাশ মন নিয়ে ফিরেছেন বাড়িতে। এসব এলাকার খামারী ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় লাভের পরিবর্তে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
[৫] কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতার পাড়া খামার ব্যবসায়ী আব্দু রশিদ জানান, তার খামারে ছোট-বড় বিভিন্ন জাতের ২৪টি গরু রয়েছে। তাতে ছোট ১৪টি গরু বিক্রি হলেও বড় গরুগুলো নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। তিনি আরো জানান, তার খামারে অষ্ট্রেলিয়ান গাভী, ঝাপসী, পিজিশিয়ান, নেপালী, ছাইওয়াল জাতের গরু রয়েছে। তার মধ্যে চার বছর ধরে লালিত পালিত বেশ কয়েকটি বড় গরু রয়েছে। নেপালী বড় গরুটি দুয়েক বাজারে তুললেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারিনি। যার মূল্য হাকা হয়েছে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্রেতারা মুলাই। যার ওজন রয়েছে ৭৪৩ কেজি।এমন সু-উচু ৮টি গরু নিয়ে বিপাকে তিনি। তার মতে, বাহিরের বড় ক্রেতা না আসায় আমরা খামারীরা বড় গরু খামারজাত করতে আগ্রহ হারাচ্ছি।
[৬] ব্যবসায়ী আমানো হলিফা বলেন তার বেশ কয়েকটি মহিষ ছিল এমনে দাম কম থাকায় লস পড়েছে সেখানে তার একটি মহিষ মারা গিয়ে লাভের বদলে নিজের কেশ টাকাও পাবেনা। অপর খামারী বদরু, এরশাদ উল্লাহ, হাজী আবু তালেব, হাসান, বেলাল সহ অনেকেই জানান, দেশে করোনার প্রভাবে মধ্যবিত্তরা অনেকেই কুরবানী করতে না পারায় বাজারে গরুর চাহিদা কম থাকায় বড় গরু নিয়ে চিন্তিত আমরা।
[৭] এই বাজারের ক্রেতা আব্দুস ছালাম জানান, আমরা ৩ জনে মিলে একটি গরু কিনতে এসেছি। দাম কম থাকায় আমরা সন্তুষ্ট। স্থানীয় অনেকে জানান বাজারে রোগ আক্রান্ত অনেক গরু দেখা গেছে। এই বিষয়ে বাজারের ইজারাদারের ভূমিকা প্রশ্ন বিদ্ধ বলেছেন অনেকে।
[৮] গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) আনিছুর রহমান জানান, পুলিশ মোতায়ন সহ যেহেতু মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসবকে স্বরনীয় করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করে যাচ্ছি। জাল টাকা রোধে আমরা সচেষ্ট। প্রয়োজনে ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তায় আমরা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের লেনদেনের ব্যবস্থা রেখেছি। সেই সাথে ইজারাদার কর্তৃপক্ষকে এসপি স্যারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :