সৌরভ ঘোষ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : [২] নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় কুড়িগ্রামের সাবিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যা দুর্গত প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষের। করোনা পরিস্থিতির পাশাপাশি বন্যায় কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষেরা খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করছে।
[৩] এ অবস্থায় কোরবানীর ঈদের আনন্দ মলিন হয়ে গেছে জেলার প্রায় ৪ শতাধিক চরাঞ্চলের বন্যা দুর্গত মানুষের। বিশেষ করে হতদরিদ্র পরিবারগুলো ছেলে-মেয়েদের নতুন জামা-কাপড়তো দূরের কথা এক টুকরো মাংস মুখে তুলে দেয়ার কথাও ভাবতে পারছে না তারা।
[৪] সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার গারুহারা চরের মোফাজ্জল হোসেন জানান, আমরা দিনমজুরের কাজ করে দিন এনে দিন খাই। করোনা ভাইরাসের কারনে কাজ ছিল না। তার উপর বন্যা একেবারের বসে থাকা ছাড়া উপায় নাই। ৭ জনের পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে রয়েছি। এই এক মাসের বন্যায় মাত্র ১০ কেজি চাল পেয়েছি। তাও শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় কিভাবে ঈদের কথা ভাবতে পারি। আমাদের কোনো ঈদ নেই।
[৫] উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবার চরের হাজেরা বেগম জানান, ৩/৪ মাস ধরে আমার স্বামীর হাতে কোন কাজ নেই। ঘরে খাবার নেই। ঈদ আসলেও ছেলে-মেয়েদের মাংস খাওয়ানোর কোন উপায় নাই।
[৬] উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: রেজাউল করিম আমিন ও সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আইয়ুব আলী সরকার জানান, পুরো ইউনিয়নের মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে বন্যা কবলিত হয়ে খুব কষ্টে দিন যাপন করছে। এদের জন্য আরো সরকারী বেসরকারী সহযোগীতার দরকার। ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। যা দিয়ে তারা ঈদের দিন খেতে পারবে।
[৭] কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য সরকারীভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ঈদের আগে জেলার ৪ লাখ ২৮ হাজার ৫শ ২৫ পরিবারকে ১০ কেজি করে ভিজিএফ’র চাল দেয়া হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী আরো খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে।
[৮] কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, বন্যার পানি ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :