সুজন কৈরী : [২] সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে দামি উপহার দেয়ার কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে এক বাংলাদেশি নারী ও ১২ নাইজেরিয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তার বাংলাদেশি নারী হলেন রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন। তিনি কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করতেন।

[৩] রাজধানীর পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি ল্যাপটপ, ১৪টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোনসেট এবং অসংখ্য সিম উদ্ধার করা হয়।

[৪] চক্রটি গত দুই মাসে সারাদেশের বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

[৫] বুধবার দুপুরে মালিবাগে সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।

[৬] তিনি বলেন, প্রতারণার শিকার একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে চক্রটিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তারা অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরির পর ম্যাসেঞ্জার থেকে উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। ম্যাসেঞ্জারে মূল্যবান সামগ্রীর এয়ার লাইন বুকিংয়ের ডকুমেন্ট পাঠায়। এরপর এসব উপহারের বক্সে কয়েক মিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে বলেও ভুক্তভোগীকে জানায়। তারা ভুক্তভোগীকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদাম থেকে রিসিভ করতে বলে। এ সময় তাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী রাহাত আরা খামন ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন নিজেকে কাস্টমস কমিশনার পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে চার লাখ ২৫ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে বলেন। তারা এই টাকা কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। তাদের পাঠানো উপহার সংগ্রহ না করলে তাদের আইনি জটিলতার ভয় দেখানো হয়।

[৭] সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ভুক্তভোগী তাদের দেয়া বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিন লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা দেন। চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে সারাদেশ থেকে দুই মাসের মধ্যে শতাধিক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

[৮] গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে এমন প্রতারণা করছিলো। তাদের বাংলাদেশে অবস্থানের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। তাদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মামলা করেছে সিআইডি।

[৯] অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, বাড়ির মালিকেরা কোনো বিদেশি নাগরিককে বাড়ি ভাড়া দেয়ার আগে তাদের বৈধ কাগজপত্র পাসপোর্ট যাচাই করে বাড়ি ভাড়া দেবেন। ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগে অপরিচিত ব্যক্তির ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করা থেকে বিরত থাকবেন। প্রতিবেশী বা এলাকায় কোনো বিদেশি ব্যক্তি বাসা ভাড়া নিলে বা সন্দেহ হলে এবং কেউ যদি টেলিফোনে বা ফেসবুকে এ ধরনের উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দিলে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানান তিনি।