শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২২ জুলাই, ২০২০, ০৮:১৯ সকাল
আপডেট : ২২ জুলাই, ২০২০, ০৮:১৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ডেমরায় শীতলক্ষ্যা নদীতে মাঝিকে পিটিয়ে হত্যা, হতাশ বাদী, মামলা স্থানান্তরের দাবি

মোঃ বশির, ডেমরা প্রতিনিধি : [২] রাজধানীর ডেমরায় শুকুরশী এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর শাপলা ঘাটে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় শাহাদাত হোসেন (৩৮) নামে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারের এক মাঝিকে। তিনি নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের তারাব পৌড়সভার যাত্রামুড়া টাটকী গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

[৩] গত ২৫ মে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় জনতার হাতে আটক হওয়া দুই খুনীকে র‌্যাবের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে র‌্যাব-১১ এর সদস্যরা আসামিদের তুলে দেয় পুলিশের হাতে। পরবর্তীতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ২৭ মে ডেমরা থানায় গ্রেফতারকৃতরাসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন মৃতের ছোট ভাই মোঃ শাহিন মিয়া। পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পড়ে নৌ ফাঁড়ি পুলিশের ওপর। এদিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে আসামি গ্রেপ্তারে নেই পুলিশি তৎপরতা। দীর্ঘ দুই মাস পরও পুলিশ আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার করেনি।

[৪] অভিযোগ রয়েছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নৌ ফাঁড়ির এসআই হাফেজ মামলাটির গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামিরা জবানবন্দি দিতে রাজি হয়নি। ঘটনার পর র‌্যাবের কাছে আটককৃতরা যে তথ্য দিয়েছিলো সেই ভিডিও আদালতে উপস্থাপন করা হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আসামিরা। জবানবন্দিতে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত উল্লেখ করে। কারা কারা হত্যায় জড়িত ছিলো তাদের নাম উঠে আসে জবানবন্দিতে। এজাহার নামীয় আসামি ছাড়াও আরও ৪ জনের নাম আসে আসামিদের জবানবন্দিতে। এরপরও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অন্য আসামি গ্রেপ্তরে কোনা তৎপরতা দেখাননি।

[৫] বাদীর অভিযোগ, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে বারবার বলা হলেও তারা তা আমলে নিচ্ছেন না। আসামি পক্ষ থেকে টাকা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। কাঁচপুর ফাঁড়ির পাশেই আসামিদের বাড়ি কিন্তু পুলিশ আসামিদের বাড়িতে যায় না। কোনো অভিযান চালায় না। আসামিদের ধরতে অনুরোধ করা হলে পুলিশ বলে আসামিরা এলাকায় নেই। তাদের ধরতে অভিযান চালাতে গাড়ির প্রয়োজন। অভিযানে যাওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই পুলিশের। নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কাছে অভিযানে যাওয়ার মতো কোনো সরঞ্জাম না থাকায় বাদী পক্ষ গাড়িসহ অভিযানের নানা ব্যবস্থা করেন। খরচও দেন কিন্তু আসামি ধরতে না পারায় বাদী পক্ষ হতাশ। এমতাবস্থায় বাদী মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর করার কথা ভাবছেন। বাদী পক্ষের দাবি পুলিশি তৎপরতা না থাকায় আসামিরা এলাকায় ঘোরাফেরা করে। অজ্ঞাত কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। জবানবন্দিতে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্য থেকে শুকুরসীর ইব্রাহিম আর সেনপাড়ার মোখলেছকে প্রতিদিনই এলাকায় দেখা যায় বলে জানান, মামলার বাদী দ্রুত আসামিদের ধরে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি মামলার বাদীর।

[৬] বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হাফেজ জানান, শাহাদাত হত্যা মামলার আসামি ধরতে পুলিশ যথেষ্ট তৎপর। আসামি ধরতে এরই মধ্যে নানা জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সোর্স লাগানো আছে। তথ্য পেলে ফের অভিযান চালানো হবে। আসামি পক্ষ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, বাদী এটা বলতেই পারেন। কোন সমস্যা নাই। বাদী যদি মামলা অন্যত্র নিয়ে যেতে চান তবে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। আমি কি কাজ করছি সব বাদী জানে।

[৭] মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ মে বিকাল ৩টায় বাদীর ভাই নূর আলম, নূর নবী, আলী আজগর ও শাহাদাত কাঁচপুর ঘাটে ঘুরতে আসা যাত্রীদের নিয়ে ট্রলার দিয়ে ঘোরার ব্যবস্থা করেন। ট্রলার দিয়ে নদীতে ঘোরার সময় যাত্রীবেশে ট্রলারে থাকা এজাহারনামীয় আসামি আতাউর, হাসান, সিয়াম, তোফায়েল, সাজ্জাদ, রাসেল, হৃদয়, মাসুদ ট্রলারের অন্য এক মহিলা যাত্রীর গলার চেইনে ধরে টান দেয়।

এ নিয়ে আসামিদের সাথে ট্রলারের দায়িত্বে থাকাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অন্যান্য যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আসামিদের শুকুরশী ঘাটে নেমে যেতে বলা হয়। আসামিরা ঘাটে নেমে পরিকল্পিতভাবে ঘাট থেকে বাঁশের লাঠি সোটা নিয়ে ট্রলারে উঠে শাহাদাতের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে,অন্যদেরও লাঠিপেটা করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় শাহাদাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

[৮] ঘটনার পর স্থানীয়রা আসামি হাসানকে আটক করে র‌্যাব সদস্যদের কাছে তুলে দিলে তারা জনসম্মুখে হত্যার বর্ণনা দেন। মামলার এজাহার নামীয় আসামি ছাড়াও আরও ৪ জন এ হত্যায় জড়িত বলে জবানবন্দি সূত্রে জানা গেছে। দ্রুত সব আসামিকে গ্রেফতারের দাবি শাহাদাত হত্যা মামলার বাদী শাহীন মিয়ার।

[৯] শাহীন মিয়া জানান, ভাই হারিয়েছি, আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক। মামলার আসামি গ্রেফতারের স্বার্থে আমি মামলাটি পিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করতে চাই। সম্পাদনা : হ্যাপি আক্তার

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়