ওবায়দুর রহমান সোহান, ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শতভাগ শিক্ষার্থীর অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিতের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে অনলাইনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে ঢাবির দুই হাজার শিক্ষার্থীর ওপর চালানো প্রাথমিক জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে অনলাইন ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা যাছাই করার জন্য পূর্ণাঙ্গ জরিপ না করা পর্যন্ত তা স্থগিতের দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম। এ সময় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মীম আরাফাত মানব উপস্থিত ছিলেন।
রাগীব নাঈম বলেন, এর আগে আমরা অনলাইন ক্লাস বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছি। এবার আমরা প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে সরাসরি যােগাযােগ করার মাধ্যমে একটি প্রাথমিক জরিপ চালিয়েছি, যা অনলাইন ক্লাসের অসারতাকেই দ্বিধাহীনভাবে তুলে ধরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষা কার্যক্রম যে বিশেষ অবস্থাতেই পরিচালনা করুক না কেনাে, তাকে সেখানে সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ পূর্বেই নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একেকটি বিভাগের শতকরা চল্লিশ বা পয়তাল্লিশ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে কোনােভাবেই অংশগ্রহণ করতে পারছে না, তখন এ ধারণাটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামােতে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কথা একবারও ভাবা হচ্ছে না। ডুবে যাওয়া শরীয়তপুর, নীলফামারী, মুন্সীগঞ্জ বা সুনামগঞ্জ, এসব জেলার শিক্ষার্থীরা কেমন আছে বা পাহাড়ে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা কোনাে নেটওয়ার্কের ভেতরে বাস করছে কি না, এ নিয়ে এসি রুমে বসে থাকা প্রশাসনের কোনাে দুশ্চিন্তা দেখা যাচ্ছে না।
জরিপের ফল উল্লেখ করে রাগীব নাঈম বলেন, আমরা চারটি অনুষদ এবং একটি ইনস্টিটিউটের মোট সাতটি বিভাগের ২০০০ শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ চালিয়েছি। তাদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা ক্লাস করতে পারছেন না। ৩৩.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের বসবাস যথাযথ নেটওয়ার্ক কাভারেজের বাইরে। আরো ২৭.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বলছেন, অনলাইন ক্লাসের ডাটা খরচ তাদের ওপর যে অতিরিক্ত অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে, তা মেটাতে তাদের সরাসরি সাহায্য প্রয়োজন। জরিপে এও দেখা গেছে যে, ক্লাস করার উপযুক্ত ডিভাইসই প্রায় বারো ভাগ শিক্ষার্থীর হাতে নেই। অন্যদিকে অন্তত ৯ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী নানাবিধ কারণে মানসিক সমস্যার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাগীব বলেন, আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে একটি পূর্ণাঙ্গ জরিপ পরিচালনা করুন এবং সেই জরিপের ফল জনসমক্ষে প্রকাশ করুন। এর আগ পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস স্থগিত রাখাই আমরা একমাত্র যৌক্তিক পন্থা বলে মনে করি।
আপনার মতামত লিখুন :