শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ২২ জুলাই, ২০২০, ০১:০১ রাত
আপডেট : ২২ জুলাই, ২০২০, ০১:০১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] প্রায় ৩০ বছর পর নির্মিত হচ্ছে পাকা সড়ক বদলে যাচ্ছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের চরকাছিয়া গ্রাম

মো. মাহবুবুল আলম : [২] গ্রাম হবে শহর, ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ঘোষণার অংশ হিসেবে বাস্তবায়ন করতে কাজে নেমেছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা প্রশাসন। চরকাছিয়া গ্রামের মিহারহাট এলাকায় ৩০ বছর পর পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। অনেকটাই বদলে যাচ্ছে মিয়ারহাট এলাকা।

[৩] উপজেলা প্রকৌশলী, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা গ্রামটি পরিদর্শন করে রাস্তার কাজের প্রশংসা করেন। উপজেলার চরকাছিয়া গ্রামের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখে সরকারি কর্মকর্তারাও অভিভূত। তারা বলেন, এ পাকা রাস্তার করণে ‘সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারে গ্রামের এমন পরিবর্তন, না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। গ্রামের বাসিন্দাদের যে পরিবর্তন চলছে তা অভাবনীয়। ’

[৪] মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চলের ওই গ্রামটি শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে হলেও চরকাছিয়া গ্রামে কোনো নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ছিল না। সাবেক ও বর্তমান জেলা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও গ্রামটি দেখেছেন। ১৯৯০ সালে মিয়ারহাট বাজারটি প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে ৫২ জন ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন। একটি পাকা সড়কের জন্য গ্রামটি সকল উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যখন গ্রামকে শহড়ে রূপান্তরিত করার ঘোষণা দিয়ে সারা দেশের ন্যায় রায়পুরের চরকাছিয়া ও মোল্লারহাট এলাকার গাজিগো কাচাঁ সড়কটির কাজ শুরু করলেন, তখনি একটি কুচুক্রি মহল তা বন্ধ করতে-নানান প্রতিবন্ধকতা শুরু করেছেন।

[৫] এ গ্রামে পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। পাকা বাড়ি ৮০টি, কাঁচা বাড়ি আড়াই হাজার, সরকারি চাকরিজীবী মাত্র ৫০ জন, ৫টি জামে মসজিদ, দেড় শতাধিক কবরস্থান, ৫টি ঈদগাহ। ৬০ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গ্রামের শতাধিক ব্যাক্তি থাকেন দেশের বাইরে, তার মধ্যে ৮ জন নারী। গ্রামে ২ হাজার কৃষক, জেলে ও দিনমজুর পরিবার। ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ৭৩০ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। আয়তনে গ্রামটি মাত্র ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য। আরো তথ্য মিলল, গ্রামে গত ১০ বছর ধরে নিরাপদ পানি সরবরাহ রয়েছে। ৭টি কাঁচা ও আধাঁ পাকা রাস্তা আছে। এ ছাড়া তেমন কোনো নাগরিক সুযোগ-সুবিধাই নেই।

[৬] বদলে ফেলা হচ্ছে যা কিছু: চরকাছিয়া গ্রামে কাঁচা রাস্তা ৬০০ ফুট ও ইটের রাস্তা আছে ৪০০ ফুট। সব রাস্তা পাকা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গ্রামের সব বাড়িতে নিরাপদ পানি নাই। তারও কাজ প্রক্রিয়াধীন। গ্রামের পাশে ৪ কিলোমিটা দূরে মেঘনা নদী। তার চারপাশে বাঁধ দিয়ে এটিকে দৃষ্টিনন্দন করা হচ্ছে। গ্রামে স্মার্টফোন ছিল হাতে গোনা কয়েকটি। এখন তা বাড়ছে। কারণ গ্রামে ওয়াই-ফাই সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আগে রাতের গ্রাম ছিল অন্ধকার। এখন আলো-ঝলমল করে। সৌরবিদ্যুৎ পোল বসানো হয়েছে দুই হাজার পরিবারের সুবিধার জন্য। সন্ধ্যার পর বিদ্যুতের আলোয় এখন আলোকিত থাকে পুরো গ্রাম।।

[৭] গ্রামবাসীর অনুভূতি: গ্রামের নেতৃস্থানীয় ইমাম হোসেন, আব্দুল করিম ও জাহাঙ্গির বলেন, ‘আমরা খুবই খুশি। সন্ধ্যা লাগলে গ্রামকে আর গ্রাম মনে হয় না। পাকা রাস্তা হওয়ায় মনে হয় শহর হয়ে যাচ্ছে। ’ গ্রামের দরিদ্র কৃষক আবু কালাম খাঁ বললেন, ‘আমার মেয়ে মোল্লারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। খুব কষ্ট করে কাঁদার মধ্যে হেঁটে তাকে স্কুলে যেতে হতো। রাস্তাটি পাকা হওয়ায় মেয়েটা তাড়াতাড়ি স্কুল যেতে পারবে।

[৮] ’চরবংশী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল হোসেন বলেন, ‘চরকাছিয়া গ্রামটিকে শহরের মতো করে তোলা হবে। দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত পাকা রাস্তাটি হয়ে গেলে গ্রামের রূ পাল্টে যাবে। গ্রামবাসীর সহযোগিতা নিয়েই আমরা বর্তমান সরকারের আমলে চরকাছিয়া গ্রামকে বদলে দিতে পারবো।

[৯] দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরাজি বলেন, ‘একটি ভালো উদ্যোগে আমরা সবার সহযোগিতা পাচ্ছি। আমরা সবাই মিলে গ্রামটিকে শহরের মতো চেষ্টা চলছে।' ৩০ বছর পর ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩ কিলোমিটারে পাকা সড়কটি নির্মান হওয়ায় গ্রামবাসী আনন্দিত।

[১০] রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, ‘গ্রামটিকে পরিকল্পিতভাবে আকর্ষণীয় করে তোলা হচ্ছে। যাতায়াতব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে। নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভাবা হচ্ছে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার কথাও।’

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়