শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২১ জুলাই, ২০২০, ১০:০৮ দুপুর
আপডেট : ২১ জুলাই, ২০২০, ১০:০৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া

ডেস্ক রিপোর্ট: দু’সপ্তাহও বাকি নেই কোরবানির ঈদের। অন্যান্য বছর এ সময় নগরীতে জমে উঠতো পশুর হাট। ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় মুখর থাকতো এসব হাট। কিন্তু, এবার দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। এখনও নগরীতে জমে উঠেনি পশুর হাট। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার নগরীর পশুর হাটগুলোতে সেইভাবে গরু নিয়ে আসেননি ব্যাপারিরা। কোরবানির পশু কিনতে হাটে দেখাও যাচ্ছে না ক্রেতাদের ভিড়।

নগরীর অন্যতম সাগরিকা পশুর হাট আর বিবিরহাট গরু বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্যই জানা গেছে।

পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, গত বছরগুলোর তুলনায় এবার অনেক কম ব্যাপারি বাজারে গরু এনেছেন। যে কয়েকজন ব্যাপারি গরু এনেছেন তারাও বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। কারণ, এবার বাজারে ক্রেতার আনাগোনা কম। এখনও বিক্রি শুরু করতে পারেনি অনেক ব্যাপারি।

এদিকে পশুর হাটে ক্রেতার আনাগোনা কম হলেও চট্টগ্রামে অনলাইনে জমে উঠেছে কোরবানির পশু বেচা-কেনা। চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা খামারিরা তাদের পশু অনলাইনে বিক্রি করছেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ক্রেতারাও ঝুঁকছেন অনলাইনে। ফেসবুক পেজ অথবা অনলাইনে গরু দেখে ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খামারে যাচ্ছেন। এরপর গরু কিনে বাসায় ফিরছেন।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন ক্রেতা-বিক্রেতারা পশু বেচা-কেনা করে সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালনো হচ্ছে। পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা সরেজমিনে গিয়ে সেটিও তদারকি করছে আমাদের টিম।


তিনি আরও বলেন, তবে আমরা এবার কোরবানিদাতাদের হাটে না গিয়ে খামার অথবা অনলাইনে গরু কেনার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি। চট্টগ্রামে যেসব অনলাইন প্লাটফর্ম আগে থেকে ছিল, সেগুলোকে সমন্বয় করে আমরা অনলাইনে গরু বেচা-কেনার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছি। অন্যদিকে কিছু খামারি নিজ উদ্যোগে অনলাইনে গরু বেচা-কেনা করছেন। তারা ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইটে গরুর ছবি দিয়ে গরু বিক্রি করছেন।

এবার চট্টগ্রামের শতাধিক খামারি অনলাইনেই কোরবানির পশু বিক্রি করছেন। খামারিরা ফেসবুক ভিত্তিক বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে পশুর ছবি পোস্ট করেন, সঙ্গে ওজন ও দামও লিখে দেন। তারপর ক্রেতাদের পছন্দ হলে মুঠোফোনে কথা বলে সরাসরি খামারে এসে পছন্দের গরু কিনছেন। অনলাইনের এই হাটে কোনও ঝক্কিঝামেলা নেই। কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ীও এবার হাটে গরু তোলার পাশাপাশি অনলাইনে গরু বিক্রি করছেন। করোনা ভাইরাসের কারণে এবার হাটে কোরবানি দাতাদের আগ্রহ কম থাকায় ব্যবসায়ীরা অনলাইন প্লাটফর্মে ঝুঁকছেন। এই হাটের পরিসর এবার আগের চেয়ে বেড়েছে, বেড়েছে জনপ্রিয়তাও। করোনার কারণে এবার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর পাশাপাশি অনেক খামারি, ফার্ম বিশেষ করে ফেসবুকে পেজ খুলে গরু বিক্রির তথ্য প্রকাশ করছে, বিজ্ঞাপনও দিচ্ছে। অন্যদিকে, করোনার কারণে ক্রেতাদেরও আগ্রহ বেশি অনলাইনে।

নগরীর চৌমুহনী এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রত্যেক বছর পশুর হাটে গিয়ে কোরবানির গরু কিনতাম। এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাটে না গিয়ে অনলাইনে গরু কিনবো। করোনাভাইরাসের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনলাইনে একটি গরু ঠিক করেছি। ফার্মে অনলাইনের বর্ণনার সঙ্গে বাস্তবে মিল থাকলে কিনে নিয়ে আসবো।

তিনি আরও বলেন, অনলাইনে গরু কিনলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ কম। কারণ, বিক্রেতারা গরু ওজন করে তারপর দাম ঠিক করেন। কিন্তু, হাটে গেলে আইডিয়া করে কিনতে হয়। এই ক্ষেত্রে আইডিয়া ঠিক না হলে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু অনলাইন প্লাটফর্মে তাই ঠকে যাওয়ার সুযোগ নেই।

অনলাইনে গরু বিক্রির ক্ষেত্রে ডিজিটাল মেশিনে প্রথমে গরু মাপা হয়। তারপর গরুর কালার লাল হলে কেজি প্রতি ৪২০ টাকা ও কালো বা অন্য কালার হলে ৩৫০ থেকে ৩৭৫ টাকা হিসাব করে গরু বিক্রি করা হয়। ছোট থেকে মাঝারি সাইজের গরু এভাবেই বিক্রি করছেন। কিন্তু, যেসব গরু সাইজে বড় এবং দেখতে সুন্দর সেগুলোর দাম কেজিতে নির্ধারিত হয় না। এই ক্ষেত্রে গরুর সৌন্দর্য দেখে দাম নির্ধারণ করা হয়।

নগরীর বাকলিয়া এলাকার হাজী আনোয়ার ডেইরি ফার্মের মালিক মো. ইমরান বলেন, আমার খামারে ৪০টির মতো গরু ছিল। ইতোমধ্যে ১৫টির মতো গরু বিক্রি হয়ে গেছে। ফেসবুকে পোস্ট দেখে গরুগুলো কিনে নিয়ে গেছেন ক্রেতারা। আমার খামারে ১৩০০ কেজি ওজনের একটি ষাঁড় আছে। অনলাইনে এটি পোস্ট করার পর খুব সাড়া পাচ্ছি। ইতোমধ্যে ওই ষাঁড়টির দাম সাত লাখ উঠেছে। উপযুক্ত দাম পেলে গরুটি বিক্রি করে দেবো।

নগরীর মইজ্জারটেকের এফএ অ্যান্ড অ্যাগ্রোর মালিক নাহিদ আহমেদ বলেন, গত বছর থেকে আমরা অনলাইনে গরু বিক্রি করা শুরু করি। ওইবছর শুধু আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে গরু বিক্রি করলেও এ বছর বাইরের লোকজনও অনলাইনে গরু কিনতে আসছেন। অন্যান্য বছর বিক্রির গরু হাটে নিতে হতো। আবার সবগুলো ঈদে বিক্রিও হতো না। কিন্তু এবার আশা করছি একটা গরুও হাটে নিতে হবে না। ঈদের অনেক আগেই সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে যাবে।

শুধু নগরীর কোরবানিদাতারা অনলাইনে গরু কিনছেন তা নয়, উপজেলা পর্যায়েও এবার অনেকে অনলাইনে গরু কিনছেন।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলার বরুমছড়া এলাকার এন এম এগ্রোর মালিক ইমরান মাহমুদ বলেন, এবার একটি গরু হাটে নিতে হয়নি। আমার খামারে ৭৫টি গরু ছিল। ইতোমধ্যে সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে গেছে। অনলাইনে এবার এত বেশি সাড়া পাবো আগে ভাবিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়