জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: [২] জেলার রায়পুরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১৯৬০ সালে ৯ শতাংশ জমির উপর নির্মিত সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালিয়া বাজারের বীজাগারটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ৩০ বছর পরিত্যক্ত থাকার পর ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে একদিকে নষ্ট হয়েছে কোটি টাকার সম্পদ, অন্যদিকে বীজাগারের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাই ভূমিটির দাতাদের উত্তরসূরিরা সরকারের কাছে ওই ভূমিগুলো ফেরত চেয়েছেন।
[৩] কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষি উন্নয়নে কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে কয়েকশ' কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে তিন কক্ষবিশিষ্ট পাকা বীজাগার ও সার, কীটনাশক, ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র নির্মাণ করে। কিন্তু সিদ্ধান্তহীনতা, সুষ্ঠু পরিচালনার অভাব এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসব ভবন এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এসব ভবন এখন এলাকার বখাটে যুবক, নেশাখোরদের আড্ডাখানা। চলছে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ। এতে প্রায় প্রতিদিনই এলাকায় ঘটছে চুরি, ডাকাতি ও মারামারির ঘটনা। অনেক জায়গায় ভবনের জমিই বেদখল হয়ে গেছে।
[৪] কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কয়েকজন সাবেক কৃষি কর্মকর্তা জানান, ১৯৬২-৬৪ সালের মধ্যে তৎকালীন সরকার কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে বীজাগার নির্মাণ করে। তিন কক্ষবিশিষ্ট পাকা এ ভবনগুলো নির্মাণ করতে তখনকার আমলেই তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয় হয়। এসব ভবন নির্মাণে স্থানীয় সমাজপতি, বিত্তবান ও জমিদার শ্রেণির লোকজন তাদের মূল্যবান সম্পত্তি ৬ থেকে ১০ শতাংশ কৃষি মন্ত্রণালয়কে দান করেন। বীজাগার নির্মাণের পর কয়েক বছর কৃষি উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম অত্যন্ত সফলভাবে চলতে থাকে। বর্তমানে অধিকাংশ ইউনিয়ন বীজাগার পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এদিকে দীর্ঘদিন আগে দানকৃত এসব সম্পত্তি বর্তমানে মহামূল্যবান সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। ফলে সমাজের কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং সম্পত্তিদাতার ওয়ারিশরা পরিত্যক্ত জায়গায় নিজস্ব ঘরবাড়ি নির্মাণ করে তাদের দখলে নিয়ে গেছেন।
[৫] রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.হোসেন শহীদ সরোয়ার্দী জানান, ভবনগুলো নির্মাণের সময় যারা জমি দান করেছেন তাদের দানপত্র বা রেজিস্ট্রিকৃত অনেক দলিলপত্রই অফিসে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোন এলাকায়, কে, কতটুকু জমি দান করেছেন তারও হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি এসব দানকৃত জায়গা-জমি যে ব্যক্তি বা মালিক থেকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে নেওয়া হয়েছে তাও খারিজ করা হয়নি। ফলে বহু চেষ্টা-তদবির করেও অনেক জায়গা উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :