শিরোনাম
◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১০ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী ◈ উপজেলার ভোটে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : ওবায়দুল কাদের  ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘন: ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিন ২৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি ◈ ময়মনসিংহে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২৬

প্রকাশিত : ১৮ জুলাই, ২০২০, ০১:৪৮ রাত
আপডেট : ১৮ জুলাই, ২০২০, ০১:৪৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] যশোর সদরে কর্মসংস্থান কর্মসূচীর ৭ কোটি টাকার সিংহভাগ হরিলুট

যশোর প্রতিনিধি: [২] ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে যশোর সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় দু’দফা ৮০ দিনের কাজ দেখিয়ে ৪ হাজার ২শ’ শ্রমিকের নামে মাস্টাররোল তৈরী করে ভুয়া ব্যাংক হিসাব খুলে প্রায় ৭ কোটি টাকার সিংহভাগ লোপাট করা হয়েছে। সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ঘুরে অনুসন্ধানে এ তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।

[৩] সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর ও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ফারুক হোসেন এই বিপুল অংকের অর্থ হরিলুটের সাথে জড়িত রয়েছেন। হরিলুটের একটি বড় অংশ ঢুকেছে উপজেলা কর্তার পকেটে। অবশ্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফারুক হোসেন এ অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেছেন।

[৪] অথচ মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধানে সদরের ১৫টি ইউনিয়নের যেসব স্থানে কর্মসংস্থান কর্মসূচীর কাজ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, সরেজমিন তার প্রত্যেকটি এলাকায় যেয়ে বিন্দুমাত্র উন্নয়নের চিত্র চোখে পড়েনি।

[৫] সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী তাদের ইউনিয়নে এধরনের কোনো কর্মসূচী বাস্তবায়ন হয়েছে এমন তথ্যে দিতে পারেননি। যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর, কাশিমপুর, চুড়ামনকাঠি ও ইছালী ইউনিয়নে কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। বিগত অর্থবছরে এই ইউনিয়নগুলিতে ৪০দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় দু’দফা মোট ৮০ দিনের কাজ দেখিয়ে মাষ্টাররোলে প্রতিদিন ২শ টাকা হাজিরার যেসব শ্রমিকের নাম ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে আদৌও তারা জানেন না তাদের নামে ভূয়া ব্যাংক হিসাব খুলে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তদন্ত হলে দুর্নীতির এ চিত্র বাস্তবে প্রমাণিত হবে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি।

[৬] যশোর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্র জানায়, গত ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সদরের ১৫টি ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় ৪০দিন করে দু’দফা ৮০দিনের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়। এ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে ৪ হাজার ২শ’ শ্রমিক লেগেছে, যাদের প্রত্যেকের প্রতিদিনের হাজিরা ছিল ২শ’ টাকা। এ হিসেবে ১৫টি ইউনিয়নে ৮০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এদিকে ফতেপুর, বসুন্দিয়া, নরেন্দ্রপুর, রামনগর, চাঁচড়া, উপশহর, নওয়াপাড়া, আরবপুর, দেয়াড়া, লেবুতলা ও কঁচুয়া ইউনিয়নেও দুর্নীতির চিত্র প্রায় একই। এসব ইউনিয়নেও খোঁজ নিয়ে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর কোনো উন্নয়ন চোখে পড়েনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু কিছু ইউপি সদস্য ৪০% কাজ করার কথা স্বীকার করেছেন। তাছাড়া এসব ইউনিয়নের যেসব শ্রমিকের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে ভুয়া ব্যাংক হিসাব ও মাস্টাররোল তৈরীর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এমন খবর জানেন না ৬০% শ্রমিক। মাস্টাররোল অনুযায়ী ১৫ টি ইউনিয়নে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত হলে ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার সিংহভাগ অর্থ হরিলুটের প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে পড়বে বলে সূত্র দাবি করেছে।

[৭] ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.ফিরোজ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই কর্মসূচীর অর্থ লুটপাটের প্রশ্নই ওঠেনা। কারণ যেসব শ্রমিক কাজ করেছে তাদের প্রত্যেকের নামে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তারাই টাকা উত্তোলন করে নেয়।

[৮] অথচ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মাস্টাররোলে যাদের নাম ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বরের কাছের লোক। ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে তাদের নাম ঠিকানাই ব্যবহার করে সু- কৌশলে এ প্রকল্পের অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। এব্যাপারে অভিযুক্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফারুক হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে সব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়