ডেস্ক রিপোর্ট : করোনাভাইরাস টেস্ট জালিয়াতি, চিকিৎসাসহ বহু প্রতারণা মামলার পলাতক আসামি রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদকে গ্রেপ্তার করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তার জন্মস্থান সাতক্ষীরা এলাকার মানুষ। দেশ রূপান্তর
বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা ১০ মিনিটে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্তবর্তী কোমরপুর গ্রামের ইছামতি নদীর তীর থেকে একটি গুলিভর্তি পিস্তলসহ সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা কোম্পানি।
বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাহেদ সাতক্ষীরারই ছেলে। গত ৬ ও ৭ জুলাই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল এবং রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান দপ্তরে র্যাবের অভিযানের পর থেকে তিনি লাপাত্তা ছিলেন তিনি।
‘প্রতারক’ সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর থেকে জেলাজুড়ে সর্বস্তরের মানুষকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। সবার প্রতিক্রিয়ায় ছিল স্বস্তির বহিঃপ্রকাশ।
সাহেদের মা প্রয়াত সাফিয়া করিম বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তারই দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফারহা দিবা খান সাথী বলেন- “প্রতারক সাহেদের মা ছিলেন অত্যন্ত ভাল মানুষ। তার ছেলে এত খারাপ হবে আমরা কোনো দিন কল্পনা করিনি। সাহেদের গ্রেপ্তার ছিল সাতক্ষীরার সর্বস্তরের মানুষের চাওয়া ও পাওয়ার প্রতিফলন।”
ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, “সাহেদ সাতক্ষীরার নামকে দেশবাসীর কাছে কলঙ্কিত করেছে। সে মহা প্রতারক। তার গ্রেপ্তারে র্যাবকে অভিনন্দন।”
সাহেদের সঙ্গে সম্পৃক্তদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সবাই।
সাহেদের গ্রেপ্তার হওয়ার দৃশ্য দেখতে আসা সাতক্ষীরা পৌরসভার কমিশনার শফিকউদৌলা সাগর বলেন, “বিশ্ব যখন করোনা মহামারিতে মৃত্যুর মিছিলে আক্রান্ত তখন এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে যে প্রতারণা করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”
সাহেদ বোরকা পরিহিত অবস্থায় বুধবার ভোর ৫ টা ২০ মিনিটে র্যাবের বিশেষ অভিযানে দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর সীমান্ত থেকে একটি অবৈধ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জনৈক বাচ্চু দালালসহ কয়েকজন দালালের মাধ্যমে সীমান্ত নদী ইছামতি দিয়ে নৌকায় ভারতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।
সাহেদের ওপর আগে থেকেই নজর রাখছিল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। র্যাব- ৬ এর সাতক্ষীরা কমান্ডার সিনিয়র এএসপি বজলুর রশিদের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল তাকে আটক করে।
র্যাব থেকে জানানো হয়, সাহেদ ভারতের খুব কাছাকাছি ছিল। যদি সে সেখান থেকে পেরিয়ে যেতো তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা বেশ কঠিন হয়ে যেতো।
গ্রেপ্তারের পর র্যাবের হেলিকপ্টারে করে সাহেদকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। হেলিকপ্টার উড্ডয়নকালে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে জনৈক নারায়ণ সরকার বলেন, “সাহেদের বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়ার চিত্রটি ছিল বেশ মজার। এত প্রভাব খাটানো সেজে থাকা বাঘকে আজ যেন ভেজা বিড়াল মনে হচ্ছিল।”
সাহেদের সাথের সকল প্রতারক যেন আইন ও শাস্তির আওতায় আসে তার জন্য জোর দাবি করেন পলাশপোল এলাকার সরদার আসাদুজ্জামান।
আপনার মতামত লিখুন :