সৈয়দ আবদাল আহমেদ: বাংলাদেশের স্বাস্হ্য খাতকে সরকার যে চরমভাবে অবহেলা করেছে, কোভিড-১৯ এর কারনে তা আজ উন্মোচিত হয়ে গেছে। পরামর্শ দিতে আসা চীনা প্রতিনিধিরাও আমাদের অক্ষমতার কথা পরিষ্কারভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেছেন। লকডাউন বা কোয়ারেন্টিনের ক্ষেত্রেই শুধু নয়, যে কোনো নিয়মই দুর্বলভাবে মানা হয়েছে। আমাদের সরকার এক্ষেত্রে খুব বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আজ ১৪ জুলাই এ কথাগুলো বলেছেন।
তিনি বলেছেন, স্বাস্হ্য খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বহু বছর ধরেই সরকার অবহেলা করে আসছে। বরাদ্দকৃত বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রেও স্বাস্হ্য মন্ত্রনালয়ের দুর্বলতা ছিল সবচেয়ে বেশি। সিপিডির গবেষণাও তা উঠে এসেছে।
সরকারি হাসপাতালের করুন অবস্থার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন,আজ আমরা সরকারি হাসপাতাল তথা স্বাস্হ্যবস্হাকে ফেলে রেখেছি নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। সরকারি সেবার ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এ চাহিদা পূরনে বিনিয়োগ হচ্ছে অপর্যাপ্ত। স্বাস্হ্যকর্মীর সংখ্যাও কম। আবার তারা বেরকারি হাসপাতালে সময় দিচ্ছেন। ফলে রোগীর প্রতি মনোযোগ দেয়ার অবস্থানে তারা নেই।
ধনী ও সরকারি লোকেরা সরকারি হাসপাতাল ব্যবহার করেন না প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন,আমরা এখন যে সমস্যার মুখোমুখি তা হলো,আমাদের একটি স্বাস্হ্য ব্যবস্হা আছে যেখানে শুধু অভিজাত শ্রেণী এবং বিত্তবানরাই নয়, সরকারের উঁচু পর্যায়ের লোকজন,রাজনৈতিক নেতৃত্ব সরকারি স্বাস্হ্যসেবাটি এড়িয়ে চলেন। অভিজাতরা স্বাস্হ্যসেবা পেতে ব্যাংকক,সিঙ্গাপুর, ভারত এমনকি যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র যান। শাসকশ্রেণি সরকারি স্বাস্হ্যব্যবস্হা পুরোপুরি পরিত্যাগ করেছে।
তিনি বলেন,আজ আমরা স্বাস্হ্যব্যবস্হার এ হাল আবিষ্কার করছি, কারন মহামারির জন্য লকডাউন হওয়ায় কেউই দেশ ছেড়ে যেতে পারছেন না। ফলে করোনায় আক্রান্ত ভিআইপির সিএমএইচ-এর মতো গুটি কয়েক কেন্দ্রে যাচ্ছেন। সরকারি স্বাস্হ্যব্যসেবা ব্যবস্হার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এখন আমাদের শাসকশ্রেণি পাচ্ছে। স্বাস্হ্যসেবায় ব্যয়ের একটি বড় অংশ যে বেসরকারি খাতে চলে যাচ্ছে তা আমলে নেয়া হয়নি।
তিনি বর্তমান অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে আগামী এক বছরের মধ্যে অন্তত ১০ টি হাসপাতাল নির্মাণের পরামর্শ দিয়ে বলেন,যেগুলো সিএমএইচ এর মতো স্বাস্হ্যসেবা দিতে পারবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :