অজয় দাশগুপ্ত: রিজেন্ট হাসপাতাল এখন টক অব দ্য নেশন। বলা উচিত দেশের বাইরেও এর সমান চাহিদা। বাংলাদেশিরা যে যেখানে আছেন সবার জন্য এ আরেক হট টপিক। বলাবাহুল্য আমাদের দেশে এসব নতুন কিছু নয়। কয়েক মাস আগেই আমরা ক্যাসিনো কেলেঙ্কারীসহ ওয়েস্ট ইনে যৌনতার অবাধ কারবার নিয়ে মাতামাতি দেখেছি। কিন্তু কিছুই কুল খুঁজে পায়নি। যে তিমিরে সে তিমিরেই থাকে ঘটনা। বুদবুদের মতো মানুষের চিৎকার আর আহাজারী মিশে যায় অন্ধকারে। উঠে আসে নতুন ঘটনা। এবারের ঘটনাটি দুনিয়ার নৃশংসতম ঘটনার একটি। সবাই জানি আজ পৃথিবীতে কেউ নিরাপদ না। বড় দেশ ছোট দেশ বা বড়লোক মাঝারি সবাই আছেন আতঙ্কে। করোনা নামের মহামারীকে কীভাবে ঠেকাবে সে ভাবনায় বিশ্বের ঘুম হারাম। সকলে আসল উপাত্ত আর সংখ্যা নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত। ঠিক সেই সময় রিজেন্ট হাসপাতালের এই ঘটনা যেমনি ভয়ের তেমনি ঘৃণার।
এমন সময়ে কেউ বা কোন হাসপাতাল ভুয়া রিপোর্ট দিতে পারে এটা ভাবাও পাপ। এ লেখার সময়ে খবরে দেখলাম কাতার এয়ার ওয়েজে ইতালি থেকে ফিরে আসার সংবাদ। নিশ্চয়ই জানেন কাউকে ইতালিতে নামা দূরে থাক বিমানের বাইরেও বের হতে দেয়নি তারা। কারণ তাদের ধারণা এই সব বাংলাদেশিদের করোনা ফ্রি সার্টিফিকেট জাল বা ভুয়া হতে পারে। যার মানে আমাদের সব খবর তাদের নখদর্পণে। তাছাড়া এ ঘটনা প্রমাণ করছে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই যে রিজেন্টের দুর্নীতি তার পেছনে সাহেদের যে দাপট তা কি কেউ জানতো না? সরকার যেমন এর দায় অস্বীকার করতে পারে না তেমনি সংশ্লিষ্ট মিডিয়ার লোকজনদের কথাও যেন বাদ না পড়ে।
খবরে দেখলাম সাহেদের এই প্রভাব প্রতিপত্তি র পেছনে কাজ করেছিল টক শোতে তার রেগুলার উপস্থিতি। সামাজিক মিডিয়ায় সে সব টক শো ওয়ালাদের নাম ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। বুঝতে কোনো অসুবিধা নেই মূলত কে বা কারা তাকে এই মদদ দিতো। সবাই এও জানেন প্রচুর ঘুষ আর টাকা ছড়িয়ে টক শোতে নিয়মিত জায়গা করে নিয়েছিল সাহেদ। সেসব শোতে ঘন ঘন মন্ত্রী মিনিস্টারদের নাম ধাম-সহ তাদের সাথে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতার গল্প বলে বলে মানুষের মনে ভয় আর বিশ্বাস জন্মানোর কারণেই তার এতো বাড়াবাড়ি। তাহলে আমরা কি বলতে পারি না এইসব টকশো উপস্থাাপকেরাও দায়ী? এদের কেউ কেউ এখন এক একটি চক্র। তৃতীয় মাত্রা বা এমন কিছু নামি টক শো বাদে সাহেব, বাবুদের টকশো গুলোতে কি হয় সে খবর সবার জানা। এতোবড় ঘটনার পর ও কি তারা পার পেয়ে যাবে? সবাই মিলে শেখ হাসিনার অর্জন ও স্বপ্ন ব্যর্থ করার চক্রান্তে এরা ও সহযোগী। আমরা মনে করি মিডিয়ার সততা আর দেশের স্বার্থে সাহেদের সকল গডফাদারকে আইনের আওতায় আনা হোক। না হলে এবার ও ধামাচাপা পড়ে যাবে হাসপাতাল কেলেঙ্কারী।
আপনার মতামত লিখুন :