নূর মোহাম্মদ : ২] সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ বা কোন অনিয়মের বা অপরাধের অভিযোগ উঠলেও শাস্তি নিশ্চিত হয় খুব কম ঘটনায়। অনিয়মের ঘটনা ঘটলে প্রায় সময়ই শুনা যায় বদলীর কথা। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে বদলীর ঘটনা বেশি ঘটে। অনেক সময় সদর দপ্তরে সংযুক্ত বা বদলীর পর আর কোন পদক্ষেপও নেয়া হয়না। কিছুদিন পর বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। তবে এসব বদলী বা সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা কোন শাস্তি নয় বলে জানিয়েছেন আইনজ্ঞরা।
[৩] সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ওএসডি বা বদলী এক ধরনের আইওয়াশ। এটা কোনভাবেই শাস্তি হতে পারেনা। যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তাহলে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করতে হবে। এরপর তদন্ত শেষে অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকে বদলী করা কোন ধরনের ন্যায় বিচার না। এ ধরনের বদলীর সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে বিচারের সংস্কৃতিতে প্রবেশ করতে হবে। তাহলে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।
[৪] সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, বদলী বা ওএসডি কোন শাস্তি নয়। কাউকে বদলী করে মানুষের চোখ থেকে আড়াল করা হয়। আর এ জন্যই অপরাধ প্রবনতা থেকে অপরাধী বের হয়ে আসতে পারেনা। সঠিক বিচার না হলে অপরাধীরা সব সময় উৎসাহিত হয়। অভিযোগ আসলে সাময়িক বহিষ্কার করা এবং দ্রুত তদন্ত শেষ করে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
[৫] সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, বদলী কোন শাস্তি না। এটা সরকারি বিধানেই রয়েছে। সরকারি কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত তদন্ত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
[৬] ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, উৎকোচ বা ঘুষ দেয়া-নেয়া বেআইনী। কোন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে। আর উত্তর সন্তোষজনক না হলে সে ক্ষেত্রে সাময়িক বরখাস্ত করতে হবে এবং তদন্ত করে অপরাধ প্রমানিত হলে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। অভিযোগ প্রমানের পরও কাউকে বদলী বা ওএসডি বা সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া কোন ধরনের আইনানুগ পদক্ষেপ নয়।
[৭] তিনি বলেন, ঘুষ গ্রহন প্রমানিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দুদকে অভিযোগ দিতে হবে। দুদক বিষয়টি অনুসন্ধানের পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন। আর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ প্রমানিত হলে ফৌজদারী অপরাধে ৪২০ ও ৪০৬ ধারায়ও মামলা হবে। কারন তারা রাষ্ট্র বা জনগণের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। আর অপরাধীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবেই অপরাধ প্রবনতা কমে যাবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :