মনিরুল ইসলাম: [২] জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সংসদের অধিবেশন কক্ষে দাঁড়িয়ে স্পীকারের বিষয়ে কোন উক্তি করতে পারবেন না। কোন মন্তব্য করতে পারেন না। স্পীকার এই চেয়ারে বসে কী বলেছেন, সেটার ব্যাপারে হাউসে দাঁড়িয়ে কোনো ধরনের উক্তি এখানে করা যাবে না।
[৩] বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) জাতীয় সংসদের বৈঠকে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ পয়েন্ট অব অর্ডারে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়ার একটি বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গেলে স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে থামিয়ে দিয়ে এ কথা বলেন।
[৪] গত ২৩ জুন বাজেটের ওপর আলোচনায় সময় শুরুতে ইন্না-লিল্লাহ দিয়ে বক্তব্য শুরু করপন হারুনুর রশীদ। এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া। ওই আলোচনায় হারুনুর রশীদের বক্তৃতাকালে তার সঙ্গে ডেপুটি স্পীকারের বচসা হয়। হারুনুর রশীদকে কথা বলার সুযোগ না দেয়ার অভিযোগ তুলে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পর ডেপুটি স্পীকার বলেন, তার বক্তব্যের জবাব দেয়ার জন্য আমি একাই যথেষ্ট।
[৫] আজ ডেপুটি স্পীকারের ওই মন্তব্য তুলে ধরে হারুনুর রশীদ বলেন, এই সংসদে বিব্রত করার জন্য নয়। বিষয়টি ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়েছি। ইন্না-লিল্লাহ শুধু মরা যাওয়া হলেই পড়ে না। বিপদে পড়লেও এটা বলা হয়। আজ আমরা এক মহাসংকটে আছি। মহাবিপদে আছি এটা কি অস্বীকার করা যায়।
[৬] তিনি এক পর্যায়ে বলেন, বিগত সংসদগুলোতে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকলেও দশম ও একাদশ সংসদের বিরোধী দলের চরিত্র নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। কার্যপ্রণালী বিধিতে সংসদ সদস্য ও স্পীকারের দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে বিস্তারিত বলা রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে আপনার (স্পীকারের) সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এখানে আপনার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার এখতিয়ার কোনো সদস্যের নেই।
[৭] অতীতে হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ সাবেক ক'জন স্পীকারের নাম উল্লেখ করে হারুন বলেন, আপনি আমাদের অভিভাবক। অতীতে যারা স্পীকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। আপনিও এখন চালাচ্ছেন। আমি এ ধরনের নজির দেখিনি- ওখান থেকে কখনো কোনো স্পীকার বলেছেন ‘আমি উনার জবাব দেয়ার জন্য একাই যথেষ্ট’। আমরা সংসদে কথা বলি মাননীয় স্পীকারের মাধ্যম দিয়েই। আমি বক্তব্যের উত্তর পেতে মাননীয় সংসদ নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। কিন্তু ওই জায়গা থেকে যে উক্তি করা হয়েছে তা আমার সংসদের অভিজ্ঞতায় শুনিনি। কার্যপ্রণালী বিধির কোথাও এটা খুঁজেও পাইনি।
[৮] তিনি বলেন, আমি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে বক্তব্য দিলে উনি ওইখান থেকে বললেন যে, এটি বলা যাবে না, এটি বলতে পারবেন না।
[৯] এ পর্যায়ে হারুনকে থামিয়ে দিয়ে স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মাননীয় স্পীকার এই চেয়ারে বসে কী বলেছেন সেটার ব্যাপারে আপনি ওখানে দাঁড়িয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না। আপনি ফ্লোর নিয়েছেন। আপনার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে, তা আপনি দিতে পারেন। আমি আপনাকে সেটার ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকার অনুরোধ জানাবো। স্পীকারের বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের উক্তি এখানে করা যাবে না।
আপনার মতামত লিখুন :