শামিউল হক : [২] সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তানজিলা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওই গৃহবধূর জীবনের মূল্য নির্ধারণে শালিসী বৈঠকে উভয় পক্ষের মধ্যে সমাধান না হওয়ায়, গৃহবধূর লাশটি প্রায় ২০ ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে ছিলো।
[৩] ১ বছর পুর্বে একই ইউনিয়নের নওখাদা গ্রামের রেজাউল করিমের মেয়ে তানজিলার সঙ্গে লালুয়ামাঝিড়া গ্রামের মোজদার হোসেনের ছেলে বাবুল হোসেনের (২৮) সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পরেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। যা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, বিবাদ
ও মারপিটের ঘটনাও ঘটেছে।
[৪] এরই জের ধরে গতকাল বুধবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের লালুয়া মাঝিড়া গ্রামের লালুয়া পাড়ায় বাবুলের স্ত্রী তানজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।
[৫] মৃত তাজজিলার শশুর বাড়ির লোকজন তার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলছে বলে তানজিলার বাবা রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
[৬] স্থানীয়রা জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে তানজিলার লাশ বাড়িতে রেখেই তার শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের সঙ্গে তানিজলার বাবার বাড়ির লোকদের থানা পুলিশকে না জানিয়ে এবং মামলা না করে লাশ দাফন নিয়ে এক শালিসী বৈঠক শুরু হয়। গ্রাম্য প্রধান ফরজ আলীর বাড়িতে প্রায় রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এনিয়ে বৈঠক চলে।
[৭] স্থানীয়রা আরো জানান, ওই শালিসী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আছালত হোসেন, মেয়ে পক্ষের আত্মীয় শরীফ হোসেন, তোরাব আলী, গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুড় সহ আরো অনেকেই।
[৮] ইউপি সদস্য আছালত হোসেন শালিসী বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, মেয়ে পক্ষ ২ লাখ টাকা দাবি করেছিলো কিন্ত ছেলে পক্ষ গরীব হওয়ায় দেড় লাখ টাকা দিতে চাইলেও পরে ৫০ হাজার টাকা ব্যবধানের কারণে শালিসী বৈঠকে মিমাংসা হয়নি।
[৯] লাশের খবর থানায় না জানানো প্রসঙ্গে ওই ইউপি সদস্য আরো বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের সব জায়গায় যেতে হয়।
[১০] অপরদিকে তাড়াশ থানার ওসি মাহবুবুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ সময় পরে বৃহস্পতিবার সকালে গৃহবধূর শ্বশুড় তাড়াশ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। এরপর পরই গৃহবধূর বাবা তাকে জানান তিনি থানা এসে তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার মামলা করবেন।
[১১] ইতোমধ্যেই পুলিশকে লাশ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে । ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত এ রিপোর্ট লেখাকালীন গৃহবধূর লাশ শ্বশুড় বাড়ীতেই পড়ে ছিলো। সম্পাদনা : হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :