আজিজুল ইসলাম ,বাঘারপাড়া প্রতিনিধি : [২] যশোরের বাঘারপাড়া পল্লী জীবিকায়ন কর্মসূচির উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আলি আকবরের বিরুদ্ধে দূর্নীতি, সেচ্ছাচারিতা ও স্টাফদের মারপিটের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দূর্নীতি পরায়ন এ কর্মকর্তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
[৩] এ ব্যাপারে ১১ জন স্টাফ বিআরডিবির উপ-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এসব অভিযোগ মোটেও সত্য নয় বলে দাবি করেন প্রকল্প কর্মকর্তা আলি আকবর। তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগে আমার কিছুই হবে না। বরং আমার প্রমোশন হবে।
[৪] অভিযোগে জানাগেছে, ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর বাঘারপাড়ায় যোগদানের পর প্রকল্প কর্মকর্তা আলি আকবর নানা অনিয়ম, দূর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েন। দাপ্তরিক কাজ ফেলে রেখে ব্যক্তিগত কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকেন তিনি। ঠিকমত ঋণ কার্যক্রম তদারকি করেন না। যে কারনে ঋণ খেলাপীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। তিনি প্রায়ই সকালে হাজিরা খাতায় সাক্ষর করে হাজিরা খাতা নিজের ড্রয়ারে তালাবদ্ধ করে অফিস থেকে বের হয়ে যান। জরুরী প্রয়োজনে অফিসের কেউ ফোন করলে রিসিভ করেন না। যে কারনে ব্যাহত হয় অফিসিয়াল কাজকর্ম। কারসাজি করে স্টাফদের বেতন-ভাতা আটকে রাখেন মাসের পর মাস। এসব বিষয়ে অফিসের কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতেও দ্বিধা বোধ করেন না তিনি। গত ৯ ফেব্রুয়ারি উপ-প্রকল্প কর্মকর্তা শাহ্ আলমকে অফিসের মধ্যেই গায়ে হাত তোলেন সেচ্ছাসাচারী এই কর্মকর্তা। অফিসের চলতি হিসাবের চেক বইয়ে সভাপতির অগ্রিম স্বাক্ষর করিয়ে নিজের আলমিরাতে তালাবদ্ধ করে রাখেন এবং নিজের ইচ্চামতো বিল-ভাউচার পাশ না করে হিসাবরক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়ে নিজে চেক লেখেন। স্টাফদের বেতন-ভাতাদি দিতেও বাধা হয়ে দাঁড়ান তিনি।
[৫] অভিযোগের বিষয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা আলি আকবর বলেন, ‘শরীরিক নির্যাতনের বিষয়টি সত্য নয়। নিয়ম অনুযায়ি সকাল সাড়ে নয়টায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে হয়। এরপর আমি হাজিরা খাতা নিজের হেফাজতে রাখি। ব্যস্ততার কারনে চেক বইয়ের দু’একটি পাতায় সভাপতি অগ্রিম স্বাক্ষর করে রাখেন। এটার দায় সভাপতির,আমার না। কেউ ছুটিতে থাকলে তার নামে চেক ইস্যু করা যায় না। তাছাড়া করোনার কারনে অফিসের ফান্ডে টাকা না থাকায় বেতন-ভাতা ঠিক মত দেয়া সম্ভব হয় না।
[৬] তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ স্টাফ ঠিক মতো অফিস করেন না। কাজ দিলেও বুঝতে পারেন না। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলি বলেই
তারা আমার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
[৭] ইউবিসিসিএ’র সভাপতি মো.মনিরুজ্জামান বলেন,‘ উপ-প্রকল্প কর্মকর্তা শাহ্ আলমকে অফিসের মধ্যে লাঞ্ছিত করার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। তবে স্টাফদের কাছে শুনেছি। দু’ই একটি চেক-এ অগ্রিম স্বাক্ষর করে রাখা হয় সুবিধার জন্য। এ নিয়ে নয়ছয় করার সুযোগ নেই।
[৮] বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ বলেন,‘ অভিযোগের কপি পেয়েছি। তাছাড়া অভিযোগকারীরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাদের কাছে মৌখিকভাবে ঘটনাও শুনেছি। তবে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন বিভাগ অথবা ডিসি স্যার আমাকে তদন্তের নির্দেশ দিলে আমি দায়িত্ব পালন করবো’।
[৮] বিআরডিবির উপ-পরিচালক তপন কুমার মন্ডল বলেন‘ এ ব্যাপারে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত টিম যাবে বাঘারপাড়ায়। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া, বেতন-ভাতা নিয়ে এক ধরনের ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারনা করছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা : হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :