শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সেই সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৫ জুলাই, ২০২০, ০৫:৫৪ সকাল
আপডেট : ০৫ জুলাই, ২০২০, ০৫:৫৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১ ‘রেড জোন’ ওয়ারী লকডাউন : ওষুধের দোকান ছাড়া সব বন্ধ, বাসায় পৌঁছে যাচ্ছে পণ্যসামগ্রী

সুজন কৈরী : [২] শনিবার সকাল ৬টা থেকে লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে,‘রেড জোন’ হিসেবে ওই এলাকায় যা চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত।

[৩] ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারওয়ার হোসেন আলো বলেন, আমরা পুরো প্রস্তুতি নিয়েই লকডাউন কার্যকর করছি। এলাকাবাসীও সহযোগিতা করছে। তবে কেউ কেউ বুঝতে চান না। এধরনের পরিস্থিতিতে তারা এর আগে কখনো পড়েনি। তাদেরকেও বুঝিয়ে-শুনিয়ে বাসায় থাকতে বলা হচ্ছে। ঘরে থাকা ও অপ্রয়োজনে বের না হওয়াসহ এলকাবাসীকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়ে সার্বক্ষণিক মাইকিং করা হচ্ছে। জরুরি কাজে নিয়োজিতদের প্রবেশ-বাহিরে কড়াকড়ি শিথিল রয়েছে।

[৪] তিনি বলেন, যাদের ঘরে খাবার নেই, ফোন দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের খাবারও পৌঁছে দিচ্ছেন। কোনো বাসিন্দা কোনো পণ্যসামগ্রী চেয়ে হটলাইন নম্বরে ফোন দিলে তার বাসায় চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী সরবারহের ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। চিকিৎসাসহ রোগী বহণের জন্য সার্বক্ষণিক এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। শনিবার রাতেও একজন রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এছাড়া কেউ মারা গেলে দাফনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

[৫] ৪১ নং ওয়ার্ড কমিশনার জানান, তার এলাকায় এক লাখের বেশি মানুষ থাকেন। কারো কারো বাসায় কোনো সমস্যা হলে সেটিও দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। লকডাউনের প্রথম দিন শনিবার একজন বাসিন্দার ফ্রিজে সমস্যা দেখা দিলে তিনি বিষয়টি আমাদের জানান। পরে লোক নিয়ে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা তার ফ্রিজটি ঠিক করে দিয়েছেন। এছাড়া অপর একজন বাসিন্দারও এমন একটি সমস্যা হয়। ফোন দিয়ে জানানোর পর তার সমস্যাও সমাধান করা হয়েছে। মোদ্দা কথা, আমরা বাসিন্দাদের বুঝাতে চাচ্ছি যে, জীবনের চেয়ে অর্থের মূল্য বেশি নয়। ২১ দিন কষ্ট করে বাসায় থাকলে এলাকার সবাই ভাল থাকবেন। বাসিন্দারা বিষয়টি মেনে নিয়েছেন এবং লকডাউন কার্যকরে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।

[৬] ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের চারদিকে ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার ১৭ টি প্রবেশমুখের ১৫টিতে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে। জরুরি প্রবেশের জন্য খোলা রাখা হয়েছে এলাকাটির র‌্যাংকিং স্ট্রিটের টিপু সুলতান রোড এবং হট কেক গলি। লকডাউন কার্যকরে সহযোগিতার জন্য করা হচ্ছে মাইকিং। লকডাউন বাস্তবায়নে সড়ক ও অলি-গলির প্রবেশ পথগুলো ব্যারিক্যাড দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক। মানুষের অবাধ যাতায়াত ও বিচরণ বন্ধ করতে তারা কাজ করছেন। তবে জরুরী কাজে নিয়োজিতদের প্রবেশ-বাহিরে কড়াকড়ি শিথিল রয়েছে। সেনা সদস্য ও পুলিশের পেট্রেল কারও কিছুক্ষণ পর পর এলাকায় টহল দিচ্ছে।

[৭] লকডাউনের আওতায় থাকা এলাকাগুলো হচ্ছে- ওয়ারীর আউটার রোড-টিপু সুলতান রোড, যোগীনগর রোড ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন) এবং ইনার রোডগুলোর মধ্যে-লারমিনি স্ট্রিট, হেয়ার স্ট্রিট, ওয়্যার স্ট্রিট, র‌্যাংকিং স্ট্রিট ও নবাব স্ট্রিট।

[৮] এলাকার তিনটি সুপারশপ এবং ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকায় ইতিমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেয়ার বুথ। রাখা হয়েছে চিকিৎসার ব্যবস্থাও। করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল। শনিবার ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

[৯] লকডাউন বাস্তবায়নকারী সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরুর আগে বাসিন্দারা অনেকেই বেশ কিছুদিনের খাবার মজুদ করে রাখায় খারারের চাহিদা এখনও দেখা দেয়নি। রোগীদের ওষুধ সরবরাহ থেকে শুরু করে করোনা রোগীদের টেস্ট করাতে নিয়ে যেতেও সহায়তা করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। গেটে একটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে যাওয়া আসার এবং জরুরি সেবা প্রবেশের ক্ষেত্রে নাম, ঠিকানা ও তথ্য এন্ট্রি করে রাখা হচ্ছে। তারা বলছেন, বাসিন্দদের কাছে জরুরি সেবা ও সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে ১০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। লকডাউনে থাকা বাসিন্দারা অনলাইনেও বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করছেন। সেসব পণ্য ডেলিভারিম্যানের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। অসুস্থ রোগীদের জন্য ওষুধ সরবরাহের কাজও করছেন।

[১০] ওয়ারীর ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মান্নাফি বলেন, বাসিন্দাদের যেকোনো প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। বর্তমানে ওষুধ ও রোগীর করোনা টেস্টের বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা সহযোগিতা করছেন। তবে এখনো খাবারের চাহিদা তেমন পরিলক্ষিত হয়নি।

[১১] তিনি বলেন, বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই বাইরে যাওয়ার জন্য বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছেন। তবে আমরা সেটিও শক্তভাবে হ্যান্ডেল করছি। আর যৌক্তিক কারণ থাকলে অবশ্যই তাদের বের হতে বা প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। এলাকার নিম্মবিত্ত ও দরিদ্রদের খাবার পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সুইপার কলোনীতে থাকা দরিদ্রদের মাঝেও ডিএসসিসির পক্ষ থেকে খাবার পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া চেইনশপ স্বপ্ন এবং মিনাবাজারের তিনটি আউটলেটগুলো খোলা রয়েছে। এলাকাবাসীর ওষুধসহ কোনো কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের জানাচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবকরা সেগুলো বাসায় পৌঁছে দিচ্ছেন। এছাড়া ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সমন্বয় করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

[১২] ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডিসি শাহ মো. ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, লকডাউন এলাকায় প্রবেশ-বাহিরের পথগুলো নিরাপদ থাকার বিষয়ে ডিএসসিরি সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে পুলিশ। এলাকার মানুষদের ঘরে রাখতে এবং অপ্রয়োজনে বের হওয়া ঠেকাতে পুলিশের টহল টিম, মোবাইল ও পেট্রোল টিম কাজ করছে। সেইসঙ্গে পুরো এলাকায় পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমও কাজ করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়