সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: [২] জেলার তাড়াশে প্রায় এক দশক ধরে লোহার শিকলে বন্দি মানসিক প্রতিবন্ধ মো. সাজেদুল ইসলাম (১৯)। তাড়াশ পৌর এলাকার সোলাপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের একমাত্র ছেলে সাজেদুল।
[৩] মূলত প্রতিবন্ধী সাজেদুল হারিয়ে যেতে পারে, কখনো পানিতে পড়তে পারে অথবা কারো অন্যায় করতে পারে এ ধরণের ধারণা থেকেই তাকে শিকল বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে সাজেদুলের বাবা আব্দুস সামাদ বলেন। তিনি আরো জানান, অভাব অনটনের সংসারে একমাত্র ছেলের চিকিৎসার জন্য তারা স্থানীয়ভাবে যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলছেন। কিন্ত কাজ হয়নি। পরিবারের ধারণা, ঢাকার কোন চিকিৎসককে দেখালে হয়তো তাদের ছেলেটি ভালও হয়ে যেতে পারে।
[৪] দিন মজুর বাবা মায়ের কাজ করার ওপর প্রতিবন্ধী সাজেদুলদের সংসার চলে। কি করে সাজেদুলের উন্নত চিকিৎসার ব্যায় ভার বহন করবে তারা। এদিকে গত কয়েক মাস পূর্বে সাজেদুলের বোন সালমা খাতুন (১১) হঠাৎ করেই মারা যাওয়ায় ওই পরিবারে এখনো দুঃখ কষ্ট আরো বেড়ে গেছে।
[৫] তারপরও তিন সদস্যের সংসারে পেট ভাতের চিন্তায় বাড়ির সামনে গাছের সাথে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলেটার পা শিকলে বেঁধে কাজে চলে যান বাবা-মা। আর কখনো রোদ, বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে শিকলে বন্দি জীবন কাটে অসহায় সাজেদুলের।
[৬] প্রতিবন্ধী সাজেদুলের বাবা আব্দুস সামাদ আক্ষেপ করে আরো বলেন, আমার মেয়েটি মারা যাওয়ার পর এখন আমার আদরের প্রতিবন্ধী ছেলেটিই সম্বল। তাই তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কেউ কি একটু সাহায্য হাত বাড়বেন না? এ প্রশ্ন করে তিনি চোখের জল মুছতে থাকেন।
[৭] এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো. আলাউদ্দিন বলেন, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী সাজেদুলের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়া তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে সমাজসেবার কার্যক্রমের আওতায় তাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ