ইসমাঈল ইমু : [২] পুরান ঢাকায় ন্যাশনাল ব্যাংকের গাড়ি থেকে ৮০ লাখ টাকার বস্তা চুরির ঘটনায় ঘটনায় হান্নান ওরফে রবিন ওরফে সাইফুল ইসলাম (৫০), তার স্ত্রী পারভীন বেগম (৩১) এবং দুই সহযোগী মো. বাবুল মিয়া (৫৫) ও মো. মোস্তফা (৫২) গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন। তাদের কাছ থেকে চুরির ৬০ লাখ টাকা উদ্ধারও করেছে পুলিশ। বাবুল দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
[৩] গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসউদ বলেন, এই চক্রের দলনেতা হান্নান আর তাদের সব কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন তার স্ত্রী পারভীন।চুরি হওয়া প্রায় সব টাকাই পারভীনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কখন কী করতে হবে সে বিষয়ে সবাই পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করত এবং সে অনুযায়ী কাজ করতো।
[৪] টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য হান্নান বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে ওঁত পেতে থাকতেন। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে কেউ ব্যাগে রাখলে সুযোগ বুঝে সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতেন তিনি।
[৫] গত ১০ মে পুরান ঢাকায় ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে টাকা সংগ্রহ করে মতিঝিলে ফিরছিল ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি গাড়ি। চালকের পাশাপাশি একজন কর্মকর্তা এবং দুজন নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন ওই গাড়িতে।
[৬] পুরান ঢাকার বাবুবাজার আসার পর গাড়ির একজন নিরাপত্তাকর্মী দেখতে পান ৮০ লাখ টাকার একটি ব্যাগ গাড়িতে নেই। ওই ঘটনায় ন্যাশনাল ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
[৭] পুলিশের কোতোয়ালি জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার সাইফুল আলম মুজাহিদ বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ব্যাংক কর্মকর্তা ও একজন নিরাপত্তাকর্মীকে গাড়ি থেকে বেরিয়ে উপরে যেতে দেখা যায়। তখন টাকার গাড়িতে একজন নিরাপত্তাকর্মী ও গাড়িচালক ছিলেন। এই সময় চারজন কৌশলে গাড়ির কাছে এসে টাকার বস্তাটি নিয়ে যায়। এই চারজনের খোঁজে নামে পুলিশ। তবে ভিডিওটি স্পষ্ট ছিল না বলে আসামি শনাক্ত করতে বেগ পেতে হচ্ছিল। সে সময় একজন ‘সোর্স’ পুলিশকে জানায়, পুরান ঢাকায় এই ধরনের কাজ করে ‘ব্রিফকেস হান্নান’।
[৮] সাইফুল আলম বলেন, হান্নান আগে পকেট মারতো, এখন টানা পার্টির কাজ করে। অর্থাৎ ভ্যানগাড়ি থেকে দামি মালের বস্তা সরায়, ব্যাংক থেকে টাকা তুলে কেউ ব্যাগে রাখলে কৌশলে সেই টাকা নিয়ে যায়।তদন্ত করতে গিয়ে ২০১৮ সালে মতিঝিলের এক ব্যাংক থেকে এক গ্রাহকের টাকার ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার একটি ফুটেজ পায় পুলিশ।
ওই ফুটেজ দেখে এবং আরও কয়েকজন পকেটমারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে হান্নানের অবস্থান খুঁজে বের করেন তদন্তকারীরা। এরপর গত ২ জুন পুরান ঢাকার গেণ্ডরিয়া ও ভৈরব থেকে হান্নানসহ ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং চুরি হওয়া ৬০ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়।
[৯] কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, হান্নান মূলত ছোট ছোট কাজ করত। গ্রেপ্তারের পর সে বলেছে, ব্যাগের মধ্যে যে এত টাকা ছিল তা তাদের ধারণা ছিল না। তারা মনে করেছিল, ব্যাগে এক থেকে দেড় লাখ টাকা মিলতে পারে। কিন্তু এত টাকা দেখে তারা নাকি ঘাবড়ে গিয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :