মুসফিরাহ হাবীব: [২] “পরপর চার মেয়ে। আমাদের তখন একটাই চাওয়া, এবার কোলে ছেলে আসুক। সেই প্রার্থনা জানাতে মানতের পর মানত ঈশ্বরের কাছে। সুশান্ত তিন বছরের মানতের ফল। তাকেই এভাবে হারিয়ে ফেললাম।’’ বৃহস্পতিবার ছেলের শেষকৃত্য শেষে এভাবেই কথাগুলো বলেছেন সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বাবা কেকে সিং।
[৩] ছেলের কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন এই বৃদ্ধ বাবা। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে পরিবার। ছেলের মৃত্যু শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন বাবা । এ ক’দিন শুধুই ছেলের ছবির সামনে বসে কেঁদেছেন । অবশেষে এই প্রথম মুখ খুলেছেন তিনি ।
[৪] তার কথায় উঠে এসেছে ছেলে সুশান্তের মৃত্যু, প্রেম, সম্পর্ক, বিয়ে সবই । অঙ্কিতার সঙ্গে দীর্ঘ প্রেম ভেঙে গিয়েছিল সুশান্তের । তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা বারবার স্মৃতিচারণায় বলেছেন, দুইজনের সম্পর্ক আজও অটুট থাকলে হয়ত এ দিন দেখতে হত না । সুশান্তের বাবাও এদিন স্বীকার করেছেন, অঙ্কিতা তাদের পটনার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালে । কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে যায় ।
[৫] অনেক মানতের ফল যে সন্তান তার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওযা যায় না । তবু হৃদয়ে পাথর চাপা দিয়ে, এ দিন কেকে সিং বলেন, ‘যা লেখা থাকে কপালে, সেটাই হয় ।’ তিনি জানান, সুশান্তের ওপর কোনও পরিবারিক চাপ ছিল না । কোনওদিন তাকে কিছু নিয়ে জোর করা হয়নি । বরাবরই পড়াশোনায় তুখোড় সুশান্ত নিজের ইচ্ছাতেই বিনোদোন জগত বেছে নিয়েছিলেন । তার বোনও বলেছেন, অভিনেতা অর্থিক কষ্টের মধ্যে ছিলেন না ।
[৬] তবে কেকে সিং বলেন, ছেলের মানসিক অবসাদের কথা তিনি জানতেন না । জানতেন না, সুশান্ত ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনের চিকিৎসা করাচ্ছেন । মৃত্যুর তিনদিন আগেও রিয়ার সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা হয় ছেলের । সুশান্ত বলেছিলেন, এখন করোনাভাইরাসের কারণে বিয়ে করা যাবে না । তাছাড়া, একটা ছবি হাতে আছে । সেটা হয়ে গেলে পরে দেখা যাবে । এটিই ছিল সুশান্তের সঙ্গে তার বাবার শেষ কথোপকথন।
আপনার মতামত লিখুন :