এএইচ রাফি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : [২] করোনাভাইরাসের প্রভাবে জনজীবন প্রায় স্থবির। এর কারণে লকডাউন ঘোষণার পর দেশের শ্রমজীবী মানুষ অনেকটা কর্মহীন হয়ে পড়ে। আর দরিদ্র মানুষেরা হয়ে পড়েন অসহায়। কিছু আগে লকডাউন সরকার শিথিল করলেও জনজীবন এখন পুরাপুরি স্বাভাবিক হয়। মানুষ রয়েছে অর্থ সংকটে। এরই মাঝে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবির) অর্ধলক্ষাধিকের বেশি গ্রাহককে বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল চাপিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সাধারণ পরিবার গুলো। করোনার কারণে গত তিন মাসের বিল একত্র করে দিলেও স্বাভাবিকের চেয়ে সাত-আটগুন অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে তাঁদের।
[৩] গ্রাহকেরা অভিযোগ করেন, রিডাররা যথাযথভাবে মিটার না দেখে বিল করছেন। মিটার রিডারদের গাফিলতির কারণে তাঁদের বিড়ম্বনা ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ইউনিট ভাড়া সাথে সাথে বিদ্যুতের বিলও বাড়ে। এখন করোনার কারণে তিন মাস
একত্রে বিল করায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য বিলের পরিমানও বেড়ে গেছে। জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহক মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে অভিযোগ করেন।
[৪] সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কাউসার সজিব বলেন, গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে বাসার বিল এসেছে ১৮'শত টাকা। আর মে মাসের বিল এসেছে ১৮ হাজার টাকা। মিটার না দেখে আনুমানিক বিল দিয়েছে পিডিবি। তাদের কাছে অনুরোধ, গ্রাহকদের হয়রানি না করে মিটার দেখে বিল প্রদান করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
[৫] কাউতলী এলাকার বাসিন্দা শেখ আবুল কালাম আজাদ বলেন, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাস মিলিয়ে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ১২ হাজার ২৭৬টাকা। যার মধ্যে মার্চ মাসের ১ হাজার ৭৪২ টাকা এবং এপ্রিল মাসে ২ হাজার ১২০টাকা উল্লেখ রয়েছে। ৯২৩ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়েছে উল্লেখ আছে। প্রতি ইউনিট গড়ে ১২টাকা করে পড়েছে। যা বানিজ্যিক বিলের সমান।
[৬] পিডিবির জেলা বিতরণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের বিদ্যুৎ বিতরণ দুইভাগে বিভক্ত। একটি জেলা শহরের ঘোড়া পট্টির সেতু (ফকিরাপুল) থেকে দক্ষিণপাশ ও অন্যটি শহরের ঘোড়াপট্টির সেতু থেকে উত্তরপাশ। দক্ষিণপাশের দায়িত্বে রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান ও উত্তরপাশের দায়িত্বে রয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান। জেলায় শহরে ৭০ হাজার আবাসিক ও প্রায় ১৫ হাজার বানিজ্যিক বাণিজ্যিক সংযোগ রয়েছে। ১০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিট ৩ টাকা ৫০ পয়সা, ২০০ ইউনিট হলে ৪ টাকা ৫০ পয়সা ৩০০ ইউনিট হলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা এবং বানিজ্যিক প্রতি ইউনিট ১১টাকার বেশি মূল্য ধরে বিদ্যুৎ বিল তৈরি করা হয়।
[৭] দক্ষিণপাশের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান এই বিষয়ে বলেন, বিলের বিষয়ে এমন কিছু অভিযোগ এসেছে। আমরা বলেছি এগুলো সংশোধন করা যাবে। পাশাপাশি মিটার রিডিং অনুযায়ী বিল দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিল আসলেই বেশি, তাদের মূল বিলের সাথে তেমন ব্যবধান নেই।
আপনার মতামত লিখুন :