সুপ্রিয় চাকমা, রাঙ্গামাটি : [২] মরণঘাতি কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে রাঙ্গামাটিতে কমে গেছে স্বোচ্ছায় রক্তদান। কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার আগে রাঙ্গামাটিতে রক্তের অভাবে রোগীদের ভোগান্তিতে পড়েছে সে ধরনের এখনো শোনা যায়নি। সম্প্রতি কোভিড-১৯ এর কারণে রাঙ্গামাটিতে রক্তের অভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। রক্তসেবা দিতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রক্তদাতাদের। যার কারণে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সময় থেকে বর্তমানে ৭০ শতাংশ রক্তদান কর্মসূচীর হ্রাস পেয়েছে।
[৪] রক্তদানে ইচ্ছে থাকলেও রক্ত দিতে গিয়ে সমাজ ও পারিবারিকভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাড়ার লোকদের থেকে অসৌজন্যমূলক আচরণে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ শুনতে হয়। কোভিড-১৯ আতঙ্কে সাধারণ রোগীরা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এছাড়াও এই সময়ে রক্তদান থেকে বিরত রয়েছেন অনেকেই। সম্প্রতি ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে মানসিক চিন্তায় পড়েছে রক্তযোদ্ধারা।
[৫] রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শওকত আকবর জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ রাঙ্গামাটিতে ছড়িয়ে পড়লেও রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে রক্তের অভাবে কোনো রোগীকে ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়নি। রাঙ্গামাটিতে কয়েকটা মানবিক সংগঠন থাকার কারণে রক্তের প্রয়োজন হলে কোনো না কোনোভাবে রক্ত জোগাড় সম্ভব হয়েছে।
[৬] উন্মেষ সংগঠনের সভাপতি বিটন চাকমা জানিয়েছেন, রাঙ্গামাটি সহ দেশের সকল জায়গায় শুরু হয়েছে রক্তের তীব্র সংকট। অথচ কোভিড-১৯ সময়ে রক্তের চাহিদা পূরণে প্রশাসনসহ স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। যার কারেণ অনেক রোগী ও রোগীর স্বজনরা রক্তের সমস্যায় পড়ছেন। এমনকি বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রক্তগ্রহীতারা। তাছাড়া রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপতালে ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার কারণে যারা নিয়মিত রক্তদাতা রয়েছেন তারাও রক্তদানের জন্য হাসপাতাল মুখী হচ্ছেন না।
[৭] এবিষয়ে রাঙ্গামাটির সামাজিক সংগঠন জীবন’র প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ বিন জাহিদ জানান, কোভিড-১৯ এর কারণে অনেক রক্তদাতার ইচ্ছা থাকার সত্তেও রক্তদানে এগিয়ে আসতে পারছে না। রক্তদাতারা চাইলেও পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এমনকি "জীবন" সংগঠনের কর্মীদের বেশকিছু পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
[৮] একদিকে ডব্লিউএইচও সূত্রে জানা যায়, এই ভাইরাসের ফলে শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তবে রক্তদানের ফলে কোনো ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন ঘটনার প্রমাণ মেলেনি।
[৯] এছাড়াও অন্যদিকে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, রক্তদানের সময় কোনো ব্যক্তি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হতে পারেন, এ ধরনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।সম্পাদনা : হ্যাপি