মহসীন কবির : [২] সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির লাশ ফেলার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা এবং বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে। আইসোলেশন সেন্টারের কার্যক্রম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অপর একজনের মোবাইল কথোপকথনে রনি’র লাশ ফেলার বিষয়টি উঠে আসে। আর এই কথোপকথন ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে ডা. ফয়সাল ইকবাল ছাত্রলীগ নেতা রনিকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। সময় টিভি ও কালেরকন্ঠ
[৩] নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি অভিযোগ করে বলেন, 'করোনা মহামারির এই সময়ে ডা. ফয়সাল ইকবাল সিন্ডিকেট করে পুরো চিকিৎসা সেবাকে জিম্মি করে রেখেছিলো। আমরা তার প্রতিবাদ জানিয়েছি বলেই আমাকে মেরে ফেলতে চায়। আমি মৃত্যু ভয়ে ভীত নই।'
[৪] নুরুল আজিম রনি নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালনের সময়ে বিতর্কিত কিছু কর্মকাণ্ডের জন্য দলীয় পদ ছাড়তে হয়েছিলো। সামাজিক কাজসহ নানা কর্মকাণ্ডের কারণে এখনো ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে রনির। আর নগর আওয়ামী লীগের চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদকের পাশাপাশি চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন ডা. ফয়সাল ইকবাল।
[৫] এর মধ্যে রনি আগে সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং বর্তমানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসাবে পরিচিত। আর ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরের উদ্দিনের অনুসারী।
[৬] ছাত্রলীগ নেতা রনিকে হুমকি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে এটাও একটি কারসাজি। আমার গলার স্বর নকল করে এটি সাজানো হয়েছে। টেলিফোনের কণ্ঠের সাথে আমার কথার কোনো মিল নেই। সাজ্জাতের সাথে আমার এ ধরণের কোনো কথা হয়নি। আর আমি রনিকে নিয়ে কেন কথা বলতে যাব? রনি কি আমার সমকক্ষ? বরং তাকে নিয়ে কথা বলতে গেলে তাকে জাতে তোলা হবে। আমি আমার কাজে ব্যস্ত আছি। হুমকি দেয়ার বিষয়টি আমি জানতাম না। কিছুক্ষণ আগে একজনের মোবাইলে শুনেছি মাত্র।’
[৭] নগরীর আগ্রাবাদ এক্সেসরোডে স্থাপিত ১০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারের মূল উদ্যোক্তা সাজ্জাত হোসেন মোবাইলে কথা বলেন চিকিৎসক নেতা ডা. ফয়সাল ইকবালের সাথে। কথোপকথনে আইসোলেশন সেন্টারের জন্য ডা. ফয়সাল ইকবালের সহায়তা চাওয়া হলে তিনি সহযোগিতা দিতে অস্বীকার করেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠিত আড়াইশ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারকে তিনি মূল হিসাবে চিহ্নিত করে সেটির সাথে থাকার কথা বলেন।
[৮] এছাড়া তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আইসোলেশন সেন্টারটির’ও নানা সমালোচনা করেন। শেষ পর্যায়ে তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রনির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘দেশ একটু সুস্থ হোক। ওর লাশ দেখা যাবে। ওর লাশ যদি না ফেলি আমার নাম ফয়সাল ইকবাল না।’ সোমবার সকাল থেকে ডা. ফয়সাল ইকবালের টেলিফোন আলাপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আর এ নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।
[৯] ‘রইন্যার লাশ রাস্তায় দেখা যাবে। ওর লাশ যদি না ফেলি আমার নাম ফয়সাল ইকবাল না’ এই শিরোনাম দিয়ে দুপুরে নিজের ফেসবুক ওয়ালে নুরুল আজিম রনি লিখেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ এবং জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলন করায় নগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বিএমএ নেতা ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী আমার লাশ রাস্তায় ফেলার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি আর কোনো গণমাধ্যমকে বক্তব্য দিতে রাজি নই। আপনারা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন সাহেবের বক্তব্য গ্রহণ করুন।’
আপনার মতামত লিখুন :