শিরোনাম
◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১০ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী

প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২০, ০৭:১৪ সকাল
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২০, ০৭:১৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] করোনায় ১৯ দেশে ১১০৬ বাংলাদেশির মৃত্যু: রামরু

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের ১৯টি দেশে এক হাজার ১০৬ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি রিসার্চ মুভমেন্ট ইউনিট (রামরু)। সোমবার (২২ জুন) বিকালে অনলাইনে ‘বাংলাদেশি শ্রমিক ও তাদের বকেয়া’ বিষয়ে পরিচালিত এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন রামরু’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী।

[৩] তিনি জানান, এই গবেষণা কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে অভিবাসীদের প্রত্যাবর্তনে বাধ্য করা, অভিবাসনের দেশে তার প্রাপ্য মজুরি এবং অন্যান্য সম্পদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার আর্থিক পরিমাপ প্রদান করে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রামরু’র নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।

[৪] গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গত তিন মাসে ফিরে আসা ৫০ জন অসহায় অভিবাসীর ওপরে রামরু একটি গবেষণা পরিচালনা করে। বিশ্বায়ন একদিকে যেমন অভিবাসীদের জন্য কর্মের সুযোগ করে দিয়েছে, অন্যদিকে তাদের জীবন এবং জীবিকাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। যেকোনও জরুরি মুহূর্তে যেমন— সার্স, ইরাক-কুয়েত যুদ্ধ, আরব স্প্রিং ইত্যাদির সময়ে অভিবাসীরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। করোনাভাইরাসও এর ব্যতিক্রম নয়। এ পর্যন্ত ১৯টি দেশে এক হাজার ১০৬ জন বাংলাদেশি করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত কেসের তিন- চতুর্থাংশ অভিবাসীকেই রাস্তাঘাট ও দোকান ইত্যাদি এলাকা থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে জেলে কিংবা ডিটেনশন ক্যাম্পে প্রেরণ করেছে। এক-দশমাংশ অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে এসেছেন এবং বাকিরা ছুটিতে এসেছেন।

[৫] রামরু জানায়, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের সময় এসব দেশ জেলে থাকা অভিবাসীদের কোভিড-১৯ থেকে নিরাপদে রাখার জন্যই দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। অথচ এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, তাদের সবাই আগে থেকে জেলে বা ডিটেনশন ক্যাম্পে ছিলেন না। করোনাকালীন সময়ে তাদের জেলে নেওয়া হয়। এক একজন ২০-২৮ দিনের মতো এক কাপড়ে জেলে ছিলেন। কেউ কেউ সেলোফিনের প্যাকেট পরে গোসল সেরে আবারও পুরনো কাপড় পরেন। শারীরিক নির্যাতন, অনিয়মিত খাদ্য, টাকা পয়সা ও মোবাইল আত্মসাত অনেকেরই এসব অভিজ্ঞতা আছে। সাক্ষাৎকারীদের ২৬ শতাংশের ওইসব দেশে কোনও দেনা-পাওনা নেই। কিন্তু ৭৪ শতাংশের কিছু না কিছু পাওনা রয়ে গেছে। এই পাওনার পরিমাণ ৯ হাজার ৫০০ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত, যেখানে গড়ে এক একজনের এক লাখ ৭৫ হাজার টাকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো মূলত তাদের পাওনা বেতন, স্থানীয় কিছু বন্ধুদের বিপদে ধার দেওয়া, ভিসা রিনিউ করার জন্য দেওয়া টাকা।

[৬] প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর পরামর্শ হিসেবে ড. তাসনিম সিদ্দিকী জানান, এই গবেষণা অভিবাসীদের সুরক্ষায় ১৯৯০ সালের কনভেনশনকে আবারও সামনে আনার জন্য পরামর্শ দেয়। ২০১৬ সালের মাইগ্রেন্টস ইন কান্ট্রি অব ক্রাইসিসের সুপারিশমালা জরুরি সময়ে অভিবাসীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে উৎসাহিত করে। একইসঙ্গে গ্লোবাল কমপ্যাক্টে যে ধারাগুলো অভিবাসীকে এধরনের পরিস্থিতিতে সুরক্ষা দিতে পারে, সেগুলো সম্পর্কেও সবাইকে পরিচিত করতে পারে।

[৭] অনলাইন আলোচনায় অংশ নিয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত বলেন, ‘কর্মী গ্রহণকারী ওইসব দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে দেশের নিয়োগকর্তার কাছ থেকে ফিরে আসা অভিবাসীর প্রাপ্য নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ জানাই।’ এজন্য তিনি ফিরে আসা অভিবাসীদের ডাটাবেজ তৈরির ওপরে বিশেষ জোর দেন।

[৮] প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, ‘রামরু’র প্রতিবেদন আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা এবং ইন্টারন্যাশনাল নেগোসিয়েশনে সহযোগিতা করবে।’

[৯] পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিবাসীদের অধিকার রক্ষার বিষয়গুলো সব সময়ের, কিন্তু কোভিডের কারণে এগুলো আবারও সামনে চলে এসেছে।’ এসময় তিনি অভিবাসীদের অত্যন্ত সাবধানতা ও সচেতনতার সঙ্গে প্রবাসে বসবাসের জন্য অনুরোধ জানান।

[১০] মাইগ্রেশন ফোরাম এশিয়ার সমন্বয়কারী উইলিয়াম গয়েজ বলেন, ‘যেকোনও দেশ থেকে চার্টার্ট ফ্লাইটে লাক ফেরত আনার আগে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীদের ওই দেশে বেতন বা অন্য কোনও পাওনা থাকলে, নিয়োগকর্তার কাছ থেকে তা আদায়ের জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে নিতে পারেন। পরে ওই টাকা ফেরত এনে দেশে তাকে দিতে পারেন।’

[১১] মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘কোভিড ১৯ এর কারণে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার অভিবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, আমরা সব অভিবাসীর সুরক্ষা চাই।’

[১২] জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ নোমান বলেন, ‘অভিবাসীদের আবারও একত্রিকরণে ওয়েজ আর্নার্স ফান্ড থেকে বরাদ্দের বাইরে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকেও বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।’বাংলা ট্রিবিউন, প্রিয়ডটকম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়