আনিস তপন : [২] সোমবার সরকারি বাসভবন থেকে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসজনিত বিরাজমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ফসলের বীজ উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ ও বিপণন নিরবচ্ছিন্ন রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনলাইন সভায় এ কথা বলেন, কৃষিমন্ত্রী। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান।

[৩] কৃষিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশ ও এদেশের কৃষকেরাও বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি। এটি মোকাবিলায় সরকার কৃষিখাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভর্তুকিসহ নানা প্রণোদনা দিচ্ছে।

[৪] এবছর কৃষকের ক্রয় ক্ষমতা ও আর্থিক স্বচ্ছলতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হাইব্রিড ধান বীজ, ভুট্টা বীজ ও সবজি বীজসহ অন্যান্য বীজে কম মুনাফা অর্জন করার জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) নিয়ে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বীজ কোম্পানিগুলোকে কৃষকের সেবায় কৃষির সেবায় এগিয়ে আসারর আহবান জানান মন্ত্রী।

[৫] ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং সকলের সহযোগিতার ফলে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের অসহনীয় দুর্যোগের মাঝেও লক্ষ্যমাত্রার অধিক বোরো ফসল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

[৬] ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে আউশ ধান বীজ, আমন ধান বীজ ও পাট বীজ কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে আউশ ধান আবাদ কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। আশা করা যায়, কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আউশেও বোরোর মতো ভাল ফলন পাওয়া যাবে।

[৭] শুরুর দিকে মৌসুমি ফল ও শাকসবজি বাজারজাতে কিছু সমস্যা থাকলেও এখন তেমন সমস্যা নেই বলে উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, মোটামুটি ভাল দামেই চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছে। পাশাপাশি, আমসহ মৌসুমি ফলেরও ভাল দাম পাচ্ছে কৃষক।

[৮] করোনার কারণে দেশের এই ক্রান্তিকালে আসন্ন আমন মৌসুমে উৎপাদন বাড়ানো এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমন ধান আবাদের এরিয়া বোরোর চেয়ে বেশি হলেও উৎপাদন অনেক কম। একমাত্র উচ্চফলনশীল জাতের গুণগতমানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদনশীলতা শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ বৃদ্ধি করা সম্ভব। তিনি বলেন, আমন ও রবি মৌসুম সামনে, সেখানে অনেক শাক-সবজি, ভুট্টা, ডাল, তৈলসহ উফশীধান ও হাইব্রিড ধান বীজের প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য, স্থিতিশীল খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের জন্য গুণগতমানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন ও পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতে কৃষি মন্ত্রণালয় সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

[৯] কৃষি সচিব মো: নাসিরুজ্জামান বলেন, করোনার প্রকোপের শুরু থেকেই কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সংস্থাসমূহ এবং সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন হলে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকটের যে আশংকা করা হচ্ছে বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়বে না।

[১০] সভায় জানানো হয়, এবারই প্রথম বীজে ভর্তুকি প্রদান করেছে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয় হতে বিএডিসি’র ১৯ হাজার ৫০০ মে.টন আমন ধানবীজ চাষী পর্যায়ে বিক্রয়ের জন্য ২০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। বিএডিসি তাদের নির্ধারিত বিক্রয়মূল্যের চেয়ে কেজি প্রতি ১০ টাকা কম দামে উফশী আমন ধানবীজ ও হাইব্রিডের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ৫০ টাকা কম দামে চাষী পর্যায়ে বীজ বিক্রি করেছে বলেও সভায় জানানো হয়।