হ্যাপি আক্তার : [২] তাল আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয় একটি ফল। মোহনীয় ঘ্রাণ এবং সুমিষ্ট স্বাদ আমাদের অনেকেরই প্রিয়। দেশে এর ব্যাপক চাষ হলেও এর আদি নিবাস আফ্রিকা। পাকা তালের রস দিয়ে পিঠা খেতে অনেক মজার হলেও কচি তালও খেতে অনেক মজাদার। সাধারণত গ্রীষ্মকালে বাজারে কচি তাল দেখতে পাওয়া যায়। এর নরম কচি শাঁস শুধুই খেতেই সুস্বাদু নয়, বরং এতে থাকা অনেক পুষ্টিগুণ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এতে থাকা অনেক খাদ্যশক্তি এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদান আমাদের ভীষণ উপকার করে থাকে।
[৩] জেনে নেয়া জাক তালের শাঁসের পুষ্টিগুণ এবং এর উপকারীতা সম্পর্কে।
পুষ্টিগুণ :
মিষ্টি স্বাদের কচি তালের শাঁস শুধুই খেতেই সুস্বাদু নয়, রবং পুষ্টিতেও অনেক ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম তালের শাঁসে আছে জলীয় অংশ ৮৭.৬ গ্রাম, আমিষ ০.৮ গ্রাম, ফ্যাট ০.৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১০.৯ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০৪ গ্রাম, রিবোফাভিন ০.০২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি মিলিগ্রাম। এসব উপাদান আমাদের শরীরকে নানা রোগ থেকে রক্ষা করাসহ রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
উপকারীতা :
১) তালে শাঁসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। একই সাথে এটি ক্যান্সারের মত মরণ ব্যাধি রোগ থেকে আমাদের বাঁচায়। তালের শাঁস আমাদের স্মৃতিশক্তি ভালো রাখে এবং শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে। একই সাথে এটি বমিভাব আর বিস্বাদ দূর করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২) তালে শাঁসে ক্যালসিয়াম থাকায় এটি আমাদের দাঁতের জন্য অনেক ভালো। দাঁতের এনামেল ভালো রাখে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। একই সাথে তালের শাঁস হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূরীকরণে দারুণ ভূমিকা রাখে।
৩) তালে শাঁসে আছে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন, সালফার, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মত বেশ কিছু উপকারী উপাদান। যা আমাদের চোখের জন্য অত্যান্ত উপকারী। তাই তালের শাঁস খেলে আমাদের দৃষ্টিশক্তির অনেক উন্নতি হয় এবং একই সাথে রাতকানা রোগ থেকে চিরতরে রেহাই পাওয়া যায়। এছাড়াও চোখের এলার্জি সহ অন্যান্য চোখের রোগের প্রকোপ কমাতে তালে অনেক কার্যকরী।
৪) অক্সিডেন্ট থাকায় এটি খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর এর ফলে আমরা বিভিন্ন রকম সিজিনাল অসুখ থেকে মুক্তি পাই। এছাড়াও তালের শাঁস খেলে লিভারের সমস্যা দূর হয়। এতে থাকা ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্সআ মাদের পানিপানের তৃপ্তি বাড়িয়ে দেয় এবং খাবারে রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
৫) তালে শাঁস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি খেলে আমাদের শরীরের ভেতরে নাইট্রেটের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এছাড়াও এতে থাকা পটাশিয়াম আমাদের কোষ ও রক্তরসের জন্য দরকারি উপাদান হিসেবে কাজ করে। একইসাথে এটি আমাদের হৃৎস্পন্দনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৬) গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে। প্রাকৃতিকভাবে দেহকে রাখে ক্লান্তিহীন। সূত্র : বিডিহেল্থ, আসিয়ান নিউস
আপনার মতামত লিখুন :