শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখালেন অভিনেত্রী বাঁধন ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ১৯ জুন, ২০২০, ০৩:৪৮ রাত
আপডেট : ১৯ জুন, ২০২০, ০৩:৪৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কামরুল হাসান মামুন : সব সময় বর্তমান জানাকে ভেঙে নতুন জানা তৈরী করতে চাই

কামরুল হাসান মামুন : আমাদের ব্রেইন খুবই কমপ্লেক্স একটা নেটওয়ার্ক। এই ব্রেইনকে কার্যকরী রাখতে হলে একে সদা ক্রিটিক্যাল থিংকিং-এ ব্যস্ত রাখতে হয়। নতুবা আমাদের ব্রেইন তার কমফোর্ট জোন থেকে বের হতে চায় না। অর্থাৎ জী স্যার, যাচ্ছি স্যার, আসছি স্যার, ঠিক বলেছেন স্যার, সহমত স্যার ইত্যাদি করে করে আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ আমাদের ব্রেইনকে অলস বানিয়ে ফেলি। যখনই আমরা কোন বিশ্বাস বা মতবাদ বা ধারার মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যাই সেটা যেন রেল লাইনের মত ট্রেন যেমন এর বাহিরে যেতে পারেনা ঠিক তেমনি আমাদের ব্রেইন ওসবের বাহিরে চিন্তা করতে পারেনা। এইটা এক ধরণের অন্ধত্ব যা চোখ না থাকার অন্ধত্ব থেকেও ভয়ানক। কারণ ক্রিটিকাল চিন্তা করতে পারার ব্যর্থতার কারণে মানুষ রাজনৈতিক বা ধর্মীয় ফ্যানাটিকে রূপান্তরিত হয়। আমার এক পরিচিত মানুষ আছে যে উম্মাদের মত করে এক পীরের মুরিদ। তার কাছে ওই পীরই দুনিয়ার সেরা মানুষ, সব জান্তা, সব মুশকিল থেকে মুক্তিদাতা। তার মূল্যবান আস্ত জীবনটাকে ওখানকার খেদমতেই বিলিয়ে দিল। স্ত্রী সন্তানকে অবহেলা করল, চাকুরীর দায়িত্বে অবহেলা করল, নিজের শরীর স্বাস্থ্যের অবহেলা করল। তাকে যুক্তি দিয়ে যতই বুঝাই সে তার ওই বৃত্ত থেকে বের হতে পারেই না।

একই কথা খাটে রাজনৈতিক দর্শন বা মতবাদের মুরিদদের ক্ষেত্রে। অনেককেই দেখেছি যে যেই মতবাদের মুরিদ সে সেখানে আর ক্রিটিক্যাল থাকতে পারেনা। তার কাছে ওটাই শ্রেষ্ট আর বাকিসব গার্বেজ। একটি দেশ কেবল তখনই সামনে আগাতে পারে যখন সেই দেশের একটি বড় অংশের মানুষ প্রশ্ন করতে পারে, চ্যালেঞ্জ করতে, ক্রিটিক্যাল হতে পারে, মেনে নেওয়ার আগে বুঝে নিতে চায়। মানুষ হয়ে জন্মানোর সবচেয়ে বড় পাওয়া এটাই। আমি ছোটবেলা থেকেই কোন কিছুকেই বিনা চ্যালেঞ্জে মেনে না নেওয়া মানুষ। তবে এই ছোটবেলাটা কখন থেকে শুরু? আমার ক্ষেত্রে সেই জার্নিটা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শেষের দিক থেকে।

আমি এই পর্যন্ত যতটুকুই গবেষণা করেছি তার প্রায় সবটুকুই ক্রিটিক্যাল থিংকিং এর ফল। আমার অধিকাংশ কাজই অতীত কাজকে প্রশ্ন করা থেকে, মেনে না নেওয়া থেকে। অনেক কাজই করেছি যার মাধ্যমে অতীতের কাজকে ভুল প্রমান করেছি এবং আমার জ্ঞানে যা সঠিক মনে হয়েছে তা দিয়েছি। সেটাও হয়ত কেউ একদিন ভুল প্রমান করে নতুন কোন সত্য উপস্থিত করবে। এইভাবেইতো বিজ্ঞান সামনে এগিয়ে যায়। প্রতিনিয়ত ফ্রন্টিয়ারকে সামনে এগিয়ে নেওয়া।

কোন মতবাদ, বিশ্বাস কিংবা মানুষকে কিভাবে কেউ সমালোচনার উর্দ্ধে রাখে আমি জানিনা। আমি পারিনা এবং এই'খাদে পরতে চাইনা বলে আমি কোন দল করিনা। আমার কাছে দল করা মানে একই খাঁচার মধ্যে বন্দি হয়ে যাওয়া। তখন স্বাধীনভাবে কিছু বললে বলে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি। আমি সেই শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে চাই না। আমি মুক্ত থাকতে চাই যেন সব কিছুকে critically বিচার বিশ্লেষণ করতে পারি। এ এক অপার পাওয়া। আমি সব সময় নিজের বর্তমান জানাকে ভেঙে নতুন জানা তৈরী করতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়