ডেস্ক রিপোর্ট : [২] মৃত রোগীর স্বজনদের হামলায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) আজীবন সদস্য ডা. মো. আব্দুর রকিব খানের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খুলনার চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় বুধবার (১৭ জুন) খুলনা বিএমএর জরুরি সভা ও শহীদ ডা. মিলন চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও খুুলনা সদর থানার ওসি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সব চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র কোভিড-১৯ (করোনা) হাসপাতাল ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকবে বলে জানান চিকিৎসকরা।
[৩] খুলনা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে চিকিৎসকদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিএমএর জরুরি সভায় চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুলনার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের চিকিৎসক ও পরিচালকরা বিএমএর এ কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
[৪] বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা চিকিৎসক হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান। এসময় অভিযোগ ও মামলা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করায় খুলনা সদর থানার ওসির প্রত্যাহার দাবি করেন তারা। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান।
[৫] এদিকে জরুরি সভায় খুলনা বিএমএ, বিপিএমপিএ ও বিপিএইচসিডিওএ অফিসসহ সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন এবং সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কালো ব্যাচ ধারণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় খুলনা বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. মামুনূর রশিদকে আহবায়ক, ডা. মো. সওকাত আলী লস্করকে যুগ্ম আহবায়ক, ডা. সুমন রায়কে সদস্য সচিব এবং ডা. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম, ডা. দেবনাথ তালুকদার রনি, ডা. এস এম তুষার আলমকে সদস্য করে আন্দোলন মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়।
[৬] খুলনা বিএমএর সভাপতি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে খুলনা বিএমএর প্রচার ও জন-সংযোগ সম্পাদক ডা. সুমন রায় এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখের খুলনা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ, যুগ্ম সম্পাদক ডা. বঙ্গ কমল বসু, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. মামুনূর রশিদ, কার্যকরী পরিষদের সদস্য ডা. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম, ডা. দেবনাথ তালুকদার রনি, খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. রাশেদা সুলতানা, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এম এ আহাদ, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দার, খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ, খুলনা বিপিএমপিএ ও বিপিএইচসিডিওএ এর সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সওকাত আলী লস্কর প্রমুখ।
[৭] উল্লেখ্য, ১৫ জুন খুলনা বিএমএর আজীবন সদস্য বাগেরহাট ম্যাটস এর অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুর রকিব খান (৫৯) তার হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন। আগে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর স্বজনরা তাকে কৌশলে বাইরে ডেকে নির্মম নির্যাতন করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে ক্লিনিকের স্টাফরা তাকে প্রথমে গাজী মেডিক্যাল কলেজ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রতে (আইসিইউ) ভর্তি করেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৬ জুন দুপুরে দ্রুত তাকে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রতে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।বাংলা ট্রিবিউন, প্রিয়ডটকম
আপনার মতামত লিখুন :