শরীফা খাতুন, খুলনা প্রতিনিধি: [২] রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রকিব খান (৫৯) হত্যার ঘটনায় সকল আসামি ধরা পড়া না পর্যন্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ)। তবে এর আওতার বাইরে থাকবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও করোনা হাসপাতাল।
[৩] বুধবার বিকেলে বিএমএ এর এক সভায় চিকিৎসক নেতারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
[৪] বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা.শেখ বাহারুল আলম বলেন, ডা. রকিবের হত্যার ঘটনার সকল আসামীদের গ্রেফতার ও খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুলের প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের চিকিৎসকরা কর্ম বিরতি পালন করবে।
[৫] আক্ষেপ করে তিনি বলেন, বিসিএস স্বাস্থ্য প্রশাসনের পরিচালক পদমর্যাদায় একজন কর্তকর্তা ও বাগেরহাট মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অধ্যক্ষ ডা. রকিব রোগীদের স্বজন কর্তৃক মারাত্মক আঘাত পাওয়ার পরও ওসি মামলা নেননি। যে কারণে তার প্রত্যাহার দাবিসহ অবিলম্বে হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে চিকিৎসকরা আজ বেলা সাড়ে ৩টা থেকে কর্ম বিরতি শুরু করেছেন। যা সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
[৬] এদিকে এর আগে বুধবার (১৭ জুন) দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে মহানগরীর সাত রাস্তার মোড়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ), বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনাস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের (বিপিএইচসিডিওএ) ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাক্টিশনার্স এসোসিয়েশনের (বিপিএমপিএ) আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
[৭] ডা. রকিবের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার দুপুরে নিহতের ছোট ভাই খুলনা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়।
[৮] খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল বলেন, পুলিশ এ ঘটনায় বেজেরডাঙ্গা থেকে মঙ্গলবার রাতে আবদুর রহিম নামের একজনকে আটক করেছে। পরে তাকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
[৯] এদিকে বিকেলে মহানগরীর নিরালা মসজিদের সামনে নামাজে জানাযা শেষে নিরালা কবরস্থানে ডা. রকিবকে দাফন করা হয়েছে।
[১০] ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় ১৫ জুন রাতেই এ ঘটনায় সম্ভাব্য হামলাকারী রোগীর স্বজন কুদ্দুস, আরিফ, সবুরসহ কয়েকজন মহিলা। তারা ১৫ জুন রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ডা. রকিবকে লাথি ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মাথার পেছনে জখম হয়। তাকে প্রথমে গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
[১১] তিনি শুধু রাইসা ক্লিনিকের মালিক নন বাগেরহাট মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অধ্যক্ষও ছিলেন। এছাড়া সিনিয়র এ চিকিৎসক বিসিএস স্বাস্থ্য প্রশাসনে পরিচালক পদমর্যাদায় চাকুরী করতেন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার আজীবন সদস্য ছিলেন ডা. রকিব। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :