শিরোনাম
◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত ◈ বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ ও মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথিউ মিলার

প্রকাশিত : ১৭ জুন, ২০২০, ০৯:৪৫ সকাল
আপডেট : ১৭ জুন, ২০২০, ০৯:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আজাহার আলী সরকার : ব্যক্তি চেয়ে প্রতিষ্ঠানিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিতেন সাবেক ডিআইজি আজিজ

আজাহার আলী সরকার : সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনকারী ডিআইজি প্রিজন আব্দুল আজিজ, পরবর্তীতে অতিরিক্ত আইজি প্রিজন / আইজি প্রিজন দুটি পদে পদোন্নতি না পেয়ে, তার পদোবননতি হয়েছিল বলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ছিলেন। ফলে চাকরির অবসরের পরও মানসিক অস্থিরতায় দিনাতিপাত করছিলেন। ফেসবুক থেকে

ঢাকা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ও এআইজি প্রিজন কারা অধিদফতরে সদর অফিসে সাংবাদিকতার পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণে বহুবার আব্দুল আজিজের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে আমার। একাধিক বার তার সাথে কথা হয়েছে ফোনে। তিনি খুলনা, বরিশালসহ তিনটি বিভাগের ডিআইজি প্রিজন হিসেবে বেশ কয়েক বছর দায়িতব পালন করেন। সৎ ও মেধাবী আ: আজিজসহ মাএ দুইজন সরাসরি জেল সুপার হিসেবে কারা অধিদফতরে যোগদান করেন। আজিজ সাহেব বইপডায় খুব ব্যস্ত থাকতেন।তার হাতে সব সময় ব্যাগ ভর্তি বই থাকত। ভাল লেখা পড়া জানায় তিনি অধিদফতরে বিভিন্ন ফাইল ওয়ারকের কাজ করতে পছন্দ করতেন। করেও ছিলেন তাই। অসংখ্য বার দাবি করে বলছিলেন তিনিই হবেন দেশে প্রথম জেলকর্মকর্তা আইজি প্রিজন। যদিও এই পদে সবসময় সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তাদের এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম বলবৎ রয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৫ সালে মাষ্টার ডিগ্রী অর্জনকারী আজিজের জন্মস্থান রাজশাহী হলেও বাবা-মাসহ গোটা পরিবার তারা দিনাজপুর শহরের ঘাসিপাড়ায় বসবাস করতেন। তিনি আমার মরহুম বড় ভাই আমজাদ আলী সরকার (প্রাক্তন যুগ্ম সিক্রেট্রারী) -এর বন্ধু । দুইজনেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাএ। আমার বড় ভাইও ১৯৮৬ সালে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে যোগদান করেন। বড় ভাইয়ের বন্ধু এবং দিনাজপুর শহরে বাড়ি হওয়ার সুবাধে আজিজ ভাইয়ের সাথে আমার সম্পর্ক এবং যোগাযোগও ছিল অন্যান্য সাংবাদিকের চেয়ে বেশি এবং ভাল। আজিজ ভাইয়ের দায়িত্ব পালন কালে আমি প্রথমে দৈনিক আজকের কাগজ, পরে দৈনিক বাংলাবাজার পএিকায় সিনিয়র রিপোর্টার এবং দৈনিক আমাদের সময় পএিকায় বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছিলাম।

তিনটি কাগজে আমি দেশের কারাগারগুলোর বিভিন্ন অনিয়ম সমস্যা, মানবাধিকার লংঘন এবং উননয়নসহ অধিদফতরের করনীয়সহ একাধিক রিপোর্ট করেছি। শুধু তাই নয়, ঢাকা কারাগারের থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আসামি-কয়েদীর হাজিরা, কারাবন্দী নারী আসামি-কয়েদির সাথে থাকা শিশুদের জন্য কারা অভ্যন্তরে ডে কেয়ার সেন্টার চালু, চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি, খেলাধুলাসহ বছরের বিশেষ দিনে বিনোদনের ব্যবস্থা, ওপেন জেলখানা চালু এবং আসামি কয়েদীর থাকা-খাওয়ার মান বৃদ্ধিসহ বিদেশের কারাগারের সাথে বাংলাদেশের
কারাগারগুলোর তুলনা করে বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য পজেটিভ রিপোর্ট করেছি। যার অধিকাংশই তথ্যের উৎস ছিলেন আজিজ সাহেব।

সিনিয়র জেল কর্মকর্তা আজিজ ভাইয়ের সবচেয়ে ভাল এবং প্রশংসাযোগ্য গুন ছিল। তিনি কোন দিন কারা অধিদফতরের কােন কর্মকর্তা- কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির তথ্যে আমাকে দেননি বা আমিও তার কাছে সেই ধরনের তথ্যে চাইনি। তাঁর এবং আমার উদ্দেশ্য ছিল, ব্যক্তি চেয়ে প্রতিষ্ঠানিক স্বার্থকে প্রধান্য দেওয়া । একই লক্ষ্যে দেশের কারাগারগুলিতে আসামি-কয়েদির সুযোগ সুবিধার পজেটিভলি পরিবর্তন এবং উন্নয়নেই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য।

আমার জানা মতে, অতিরিক্ত আইজি প্রিজন লিয়াকত আলী খানের পর তিনিই সব চেয়ে সিনিয়র জেল কর্মকর্তা হওয়ার কথা কিন্তু বিগত সরকারগুলোর আমলাতন্ত্রিক জটিলতা এবং এক এক শ্রেণির কারা কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রের কারণেই আজিজকে পদোন্নতির পরবর্তীতে তার পদোন্নতি করা হয়।

আজিজ সাহেব দীর্ঘদিন ডিআইজি প্রিজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সততা, মেধা ও ভাল কাজের মাধ্যমে জেল অধিদফতরের বহু অবদান রেখেছেন এই মেধাবী জেল কর্মকর্তা তার চাকরি আমলে সরাসরি জেল কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিতদের সঠিক সময়ের মধ্যেই পদোন্নতি এবং জেলখানায় আসামি-কয়েদিদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিসহ নানান উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের যুগান্তকারী কাজের অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছেন।

শুধু তাই নয়, জেল কর্মকর্তা আজিজের সরাসরি হস্তক্ষেপে এবং বিভিন্ন চেষ্টার কারণেই তখন থেকেই কারাগারগুলোতে মানবাধিকার বিষয়ক ব্যাপারগুলো আমলে নিয়ে কঠোর ভাবে কার্যকর করার উদ্যোগ নেতা হয়। এসব পদক্ষেপ কার্যকর করতে তিনি বহু দেশের কারাগার পরিদর্শন করছেন। যা কারা অধিদফতরের নথিপত্রসহ দৈনিক আমাদের সময়, আজকের কাগজ এবং বাংলাবাজার পএিকাসহ দেশের বিভিন্ন পএিকায় প্রকাশিত খবরে রেকর্ড রয়েছে।

আজিজ আজ মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন।আল্লাহ্ উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন, আমিন । তিনি সৎ দক্ষ ও ভাল মানুষ ছিলেন ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়