হাসান শান্তনু : সদ্যপ্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অন্য সবার মতো দোষে-গুণে মানুষ ছিলেন। রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি একেবারে ধোয়া তুলসিপাতা ছিলেন, এমন কথা চরম সুবিধাবাদীদের পক্ষেও বলা অসম্ভব। তাঁর সবশেষ মন্ত্রিত্বের আমলে স্বাস্থ্যখাতে অবকাঠামোগত দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন হয়েছে, নানা অনিয়মের অভিযোগ আছে, কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়নের সংখ্যাগত চটকদার কথাবার্তাও আছে। সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ নাসিম কোনো অর্থেই আলোচনা-সমালোচনার উর্দ্ধে নন। দেশের গৌরবময় অধ্যায়গুলোর ইতিহাস আলোচনায় তিনি, তাঁর পরিবারের কথা আসবে বারবার। কখনো কখনো নাসিম নিজেই ইতিহাসের উপাদান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ও তাঁর মৃত্যুর পর একশ্রেণির মগজনষ্ট প্রজন্ম ফেসবুকে যেসব কথাবার্তা লিখেছে; এতে তাদের কুশিক্ষা, বর্বরতার প্রমাণ মেলে। কাজটা যখন শীর্ষ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক করেন, তখন জাতির 'বিবেকদের মগজে' পচন ধরছে কী না, এমন প্রশ্ন আসে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা সিরাজাম মুনিরা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লেখেন, 'যোগ্য নেতৃত্বে দেশ নাসিম্যা মুক্ত হল'। এ সংক্রান্ত এক মামলায় তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। যেসব শব্দ থাকে বস্তির মাদক বিক্রেতা নারীদের ঠোঁটে, সেসব শব্দে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবেক কোনো মন্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে ব্যঙ্গ করলে ওই দুই নারীর মধ্যে রুচিগত দিক থেকে আর কোনো পার্থক্য থাকে না।
কোনো পুরুষ রাজনীতিবিদের মৃত্যুর পর ফেসবুকে অকথ্য উচ্চারণ মানে নারীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা নারীবাদ নয়। যিনি বস্তির মাদক বিক্রেতা নারীর সঙ্গে নিজের শব্দগত রুচিবোধের পার্থক্যটুকু রক্ষা করতে পারেন না, তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে কারা এনে বসান? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :