শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০২০, ০৩:৩২ রাত
আপডেট : ১৬ জুন, ২০২০, ০৩:৩২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ১৮টি শর্ত দিয়ে কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে সার্বিক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার

আনিস তপন : [২] সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা এ সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, যে দিন যে এলাকায় রেড জোন ঘোষণা করা হবে সেদিন থেকে সেই এলাকার সামরিক বা অ-সামরিক সব দপ্তরে সাধারণ ছুটি কার্যকর হবে। ছুটি ব্যবস্থাপনা কার্যকর করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

[৩] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বাংলাদেশ রিস্ক জোন-বেজড কোভিড-১৯ কনটেইনমেন্ট ইমপ্লিমেন্টেশন স্ট্র্যাটেজি/গাইড অনুসরণ করে সংক্রমনের ভিত্তিতে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লাল, হলুদ ও সবুজ অঞ্চলের জেলা/উপজেলা/এলাকা/বাড়ি/মহল্লা ভিত্তিক জন চলাচল/জীবনযাত্রা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। হলুদ ও সবুজ জোনের ব্যবস্থাপনা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ করবে।

[৪] প্রত্যেকটি লাল জোনের জন্য কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা, কোভিড-ননকোভিড স্বাস্থ্য সেবা প্রটোকল, কোয়ারেন্টিন/আইসোলেশন, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, জন ও যান চলাচল, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, খাবার ও ওষুধ সরবরাহ, দরিদ্রদের মানবিক সহায়তা, মসজিদ/মন্দির-অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় চর্চা, জনসচেতনতা তৈরী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যাংকিং সুবিধসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান/শিল্প প্রতিষ্ঠান/বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি পরিচালনার বিষয়ে ষ্ট্যাণ্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ব্যবস্থা নেবে।

[৫] সিটি করপোরেশন এলাকায় জোনিং কার্যক্রমে সিটি করপোরেশন ও জেলায় জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা/উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টরা বাস্তবায়ন করবে। এতে সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, স্বেচ্ছাসেবীরা সম্পৃক্ত থাকবে।

[৬] হলুদ ও সবুজ চিহ্নিত এলাকাতে সকল সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি অফিস নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে এবং কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারি কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। ঝুকিপূর্ণ, অসুস্থ কর্মচারি এবং সন্তান সম্ভাবা নারীদের কর্মস্থলে উপস্থিতির প্রয়োজন নেই। সবক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। জরুরী/অত্যাবশ্যকীয় ক্ষেত্রে সভা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে করার কথা বলা হয়েছে।

[৭] রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয়, কর্মস্থলে যাতায়াত, ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদির মত জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ কোনোভাবে বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না। মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থবিধি মানতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ।

[৮] নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশ কঠোরভাবে মানতে হবে।

[৯] হাট-বাজার, দোকানে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় পারস্পারিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। শপিংমলের প্রবেশমূখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন জীবানুমুক্ত করতে হবে এবং শপিংমল বিকাল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।

[১০] আইন-শৃঙ্খলা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা, জরুরী পরিষেবা যেমন ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুত, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানী, ফায়ার সার্ভিস, স্থল, নদী, সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরী ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবা সংশ্লিষ্ট দপ্তর, তাদের কর্মচারি ও যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞা আওতার বাইরে থাকবে।

[১১] সড়ক ও নৌ পথে পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল চলাচল অব্যাহত থাকবে।

[১২] কৃষি পণ্য, সার, বীজ, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্প পণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরী সেবা, এবং এসবের সমঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

[১৩] চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সামগ্রী বহনকারি যানবাহন ও কর্মী, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়োজিত কর্মীগণ এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।

[১৪] ওষুধশিল্প, কৃষি, উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খাত, উৎপাদন ও রপ্তানীমূখী শিল্পসহ সকল কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে। সরকারের ‘বিভিন্ন শিল্প কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে নির্দেশনা’ নিশ্চিত করতে হবে।
নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। তবে অনলাইন কোর্স/ডিস্টেন্স লার্নিং এবং প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে পারবে।

[১৫] অঞ্চল ভিত্তিক নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

[১৬] অনুমোদিত অঞ্চলে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান, রেল ও বিমান চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

[১৭] সব সভা-সমাবেশ, গণ জমায়েত ও অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুশাসন ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে সর্বসাধারণের নামাজ আদায় এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা অব্যাহত থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়