সানাউল্লাহ লাবলু : গত কদিন ধরে তার স্বাস্থ্যের খবর রাখছিলাম। মানসিক প্রস্তুতিও ছিল একরকম হয়তো তিনি আর ফিরবেন না। তবু আশায় ছিলাম, একটা ‘অলৌকিক’ কিছু হতেই পারে। কিন্তু অলৌকিক বলে তো কিছু নেই। আশির দশকের শেষার্ধ থেকে সক্রিয় রিপোর্টার হওয়ার সুবাদে নাসিম ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেটা এতোটাই ঘনিষ্ট যে, মাঝে মধ্যে তার ধানমন্ডির বাসায় দুপুরের খাবার বা বিকেলের নাস্তার টেবিলে আড্ডা পর্যন্ত গড়াতো। রাজনীতির ভেতরের খবর জানা বোঝার জন্য আমাদের মধ্যে একটা আস্থার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।
সে সময়ের তরুণ রিপোর্টারদের অনেকের সঙ্গে মোহাম্মদ নাসিম, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, নুরুল ইসলাম নাহিদ, পঙ্কজ ভট্টাচার্য, প্রয়াত আব্দুস সালাম তালুকদার, প্রয়াত হান্নান শাহ, প্রয়াত আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, প্রয়াত খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মতো রাজনীতিকদের সঙ্গে এমন আস্থার সম্পর্ক ছিলো। খবর সংগ্রহে অনেক রাজনীতিকের অন্দর মহলে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশাধিকার ছিল। নব্বইয়ের দশকের শেষ থেকে মাঠের খবর সংগ্রহ ছেড়ে সংবাদ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়ে পড়ি। তাই নাসিম ভাইসহ সিনিয়র রাজনীতিকদের সঙ্গে সরাসরি দেখা সাক্ষাৎ কমে আসে। তবে তারা যেমন খোঁজ রাখতেন, আমিও রাখতাম। নাসিম ভাই আমাকে পছন্দ করতেন সেটা কখনো লুকোনো ছিলনা। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এ সময় একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন নাসিম ভাই। ওই পাঁচ বছরে দু’তিন দিন ইফতার পার্টি বা এ জাতীয় অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে দেখা হয়েছে।
সবসময় আক্ষেপ করেছেন, কেন উনার অফিসে যাই না। এ সময়কালে কোনো কাজে আমার সে সময়ের সম্পাদক দেখা করতে গিয়েছিলেন। নাসিম ভাই উনাকেও বলেছিলেন, লাবলুকে নিয়ে আসলেন না কেন? ২০০৭ থেকে আমি রেডিওতে। এর পরেও তিনি মন্ত্রী ছিলেন। তখনো আমাদের রিপোর্টাররা খবর সংগ্রহে গেলে নাসিম ভাই বলতেন, লাবলুকে ফোন দিতে বলবেন। আসতে বলবেন। ব্যক্তি মানুষ হিসাবে এমনই আন্তরিক ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। মানুষে মানুষে সম্পর্ককে তিনি সম্মান করতেন, গুরুত্ব দিতেন। নাসিম ভাই আজ চলে যাওয়ায় মনে হচ্ছে, আমার খোঁজ নেওয়ার একটা মানুষ এই গ্রহে কমে গেলো। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :