শাহীন খন্দকার : [২] দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারী হাসপাতাল থেকে ল্যাব টেকনিশিয়ান বিভাগ থেকে পাশ করে, অনেকে সরকারি বেসরকারী হাসপাতালে চুক্তিভিত্তি কাজ করছিলেন। আবার অনেকেই বেকার ছিলেন। দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণকালে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবায় সারাদেশে ল্যাব টেকনিশিয়ানের সংকট দেখা দেয়। আর এই সংকটকালে বেকার মেডিকেল টেকনোলস্টিরা এগিয়ে আসেন আর্তমানবতার সেবায় ।

[৩] সম্প্রতি সরকারি নিয়োগ প্রজ্ঞাপনজারি হলে সেই সব মেডিকেল ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্টরা রোববার ১৪ জুন মহাখালী স্বাস্থ্য অধীদপ্তরে ল্যারেটরি টেকনোলজিস্টরা নিজেদের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট, একাডেমিক সার্টিফিকেট এবং কোভিড-১৯ কাক্রিকালে জেলা সিভিলসার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কতৃপক্ষের নিয়োগপত্র নিয়ে জমাদিতে এসে জমা দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে!

[৪] খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কৃষ্ন সরকার আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. খায়রুল আলমের রোমের সামনে উপচেপড়া চাকুরী প্রার্থীদের ভীড় ঢেলে বাহির হয়ে এসে প্রতিবেদককে জানালেন, আমরা প্রায় তিনমাস হতে চলেছে এই মহামারীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্যাম্পল সংগ্রহসহ পরীক্ষা করেছি । সেবা দিয়েছি আজ স্বাস্থ্য অধীদপ্তর আমাদের দরখাস্থ্য নিচ্ছে না।

[৫] রাজশাহীর খায়রুল, ময়মনসিংহের জাহাঙ্গির, নরসিংদীর আলম রানার মতো সারাদেশ থেকে আগতরা জানালেন, ন্যাশনাল টিউভার ক্লোসিস বিভাগ থেকে পাশ করেছি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্যাম্পল সংগ্রহসহ পরীক্ষা করেছি । আজ এখানে এসে জানতে পারলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৮৩ জনের ইন্টারভিউ সিলেকশন করে ফেলেছে। কিন্তু আমরা যারা করোনাকালে স্বাস্থ্য বিভাগসহ সরকারের পাশে থেকে দেশ জাতির সেবা দিয়েছি বিনাপারিশ্রমিকে করোনা আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা এবং পরে তা পরীক্ষা করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। কাজটি করতে হয় মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদেরই সেই কাজ করেছি আমরা। আজ আমাদের চাকুরী না দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চাকুরী দিচ্ছেন ব্র্যাকের এবং আইইডিসিআরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্তদের!

[৬] এদিকে বাংলাদেশে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মো. আশিকুর রহমান বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রায় প্রতিটিতেই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ৪ হাজার ২০০ পদের বিপরীতে আছেন মাত্র একহাজার পাচঁশত জনা। তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজটি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কারণ একটাই; আর তা হলো, টেকনোলজিস্ট একেবারেই কম।

[৭] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক এককর্মকর্তা জানান, করোনা রোগীর দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পরীক্ষা করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এতে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন। এই দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংকট এখন সারাদেশেই চরম আকার ধারণ করেছে। ল্যাবরেটরিতে কর্মীরা টানা কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন যারা আজ তাদের বাদ দিয়ে অধিদপ্তরসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আত্বিস্বজন বেশীরভাগ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মকর্তা বলেন, সারাদেশে মেডিকেল ল্যাব টেকনোলজিস্ট যে সব ছেলে মেয়ে স্বেচ্ছায় কাজ করে আসছিলো তাদেরকেই নিয়োগ দেওয়া উচিত সরকার প্রধানের।