আনিস আলমগীর : জেগেই শুনলাম মারা গেছে যুগান্তরের রিপোর্টার নান্নু। নান্নু আগের দিন নিজের বাসায় আগুনে পুড়েছে, যেভাবে তার বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করা ছেলে মারা গেছে সেভাবে, সেই রুমে। এই বয়সী একমাত্র ছেলেকে হারানোর ব্যথা কারও শান্তনায় মিটে না! সবাই যখন তার সুস্থতা কামনা পোস্ট দিচ্ছে আমার শুধু এটাই প্রশ্ন জাগছিল মনে- বাবা ও ছেলের একই রুমে, একই রকম সময়ে, একই কাণ্ড ঘটবে কেন! সেটাতো পাকঘর না! প্রশ্ন করেছিলাম যুগান্তরের চিফ রিপোর্টার মাসুদ করিমকে। ওর উত্তরে মন ভরেনি। নান্নু শেষ পর্যন্ত তার ছেলের কাছেই চলে গেল। নান্নু আজকের কাগজে আমাদের সহকর্মী ছিল। অত্যন্ত শান্ত, ভদ্র প্রকৃতির ছেলে ছিল।
এরপর আসল নাসিম ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ। মানসিক প্রস্তুতি ছিল এই বিদায় মেনে নেওয়ার। গত ক’দিন ধরে হাসপাতালের যে রিপোর্ট পাচ্ছিলাম তাতে উনি ফিরে আসবেন ভাবিনি।
রাতে শুনলাম স্বাস্থ্য সচিব মান্নান ভা্ইয়ের সহধর্মিণী কামরুন্নাহার মারা গেছেন। যখন সচিবালয় বিট করতাম প্রথম যাদের সঙ্গে পরিচয় মান্নান ভাই তার একজন। সংস্থাপনে তৌহিদ ভাইয়ের রুমে নিত্য দেখা হত। স্বাস্থ্যসেবা সচিবের (সম্ভবত আমার ভার্সিটির ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই) চরম ব্যর্থতার মুখে মান্নান ভাইয়ের নতুন স্বাস্থ্যসচিব হওয়ায় তাই অনেক খুশিও হয়েছি। জানি না ব্যক্তিগত এই শোক নিয়ে রাষ্ট্রের এই দুঃসময়ে তিনি কাজ করবেন কিভাবে!
এরপর এল ধর্মপ্রতিমন্ত্রী [শেখ আব্দুল্লাহ ] এর মৃত্যু সংবাদ। তরতাজা মানুষ মারা গেছেন নাকি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। সৌদি আরবের সঙ্গে উনি ভালো যোগাযোগ রাখতেন। এই করোনাকালে উনার দরকার ছিল।
এতো মৃত্যুর মিছিল, সারাদিন মন্দ খবরের মধ্যে একটা ভাল সংবাদ পেলাম যে গণস্বাস্থ্যে প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ করোনামুক্ত। তার সুস্থতা কামনা করে দুই নেত্রী খোঁজ নিয়েছেন। জাফরুল্লাহর প্রতি আমার শ্রদ্ধা আরও বেড়েছে করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি গণস্বাস্থ্য ছেড়ে অন্য হাসপাতালে যেতে রাজি হননি। বলেছেন একটি হাসপাতাল বানিয়েছেন সেটি যদি তার নিজেরই সেবা নেওয়ার উপযোগী না হয়, তাহলে কি বানালেন তিনি! স্যালুট। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :