শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১২ জুন, ২০২০, ০৬:২৩ সকাল
আপডেট : ১২ জুন, ২০২০, ০৬:২৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড : তিন ধরনের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের তদন্ত কমিটি

সুজন কৈরী : রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে তিন ধরনের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। পুলিশের এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ি এই ঘটনায় দায়ের করা মামলাটির তদন্ত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া মামলার তদন্ত কাজে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির রিপোর্টও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন গুলশান থানার ওসি কামরুজ্জামান। গত ২৭ মে অগ্নিকান্ডের পর তদন্তের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল আহাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অপর দুই সদস্য হলেন সহকারী কমিশনার (গুলশান) রফিকুল ইসলাম ও গুলশান থানার ওসি কামরুজ্জামান। তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার ডিএমপি সদর দপ্তরে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে তিন ধরনের গাফিলতির প্রমান পেয়েছে।

প্রথম গাফিলতি :

করোনা সেন্টারে প্রবেশমুখে বর্ধিত আকারে মেডিকেল তাঁবু স্থাপন করা ছিল। এই তাঁবুতে চিকিৎসক ও নার্সদের ডেস্ক। তাঁবু দিয়ে করোনা ইউনিটে প্রবেশ করতে হয়। অদাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি মেডিকেল তাঁবু স্থাপন করার নিয়ম। অর্থাৎ স্থাপিত তাঁবুটি অদাহ্য হতে হবে। কিন্তু সাধারণ মানের দাহ্য তাঁবু স্থাপন করা হয়েছিল। ওই তাঁবুতে পুরাতন এসি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তাঁবু অদাহ্য হলে, এ আগুনের সূত্রপাত হতো না। তাছাড়া ওই স্থাপনা স্থাপন করতে রাজউকের কোনো অনুমোদন ছিল না।

দ্বিতীয় গাফিলতি :

তাঁবুর এসিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর সেটা নির্বাপন করতে চেস্টা করেন ক্লীনার আরাফাত। তিনি মেঝে পরিষ্কার করার লাঠিযুক্ত সুতার ঝাড়– দিয়ে এসির আগুন নেভানোর চেস্টা করেন। কিন্তু ঝাড়– স্যানিটাইজ জাতীয় তরলে ভেজা ছিল বলে সেটি এসির কাছে নিয়ে যেতেই আগুনের মাত্রা বেড়ে যায়। এসময় আরাফাত চেস্টা করতে থাকেন আগুন নেভাতে। এসব দেখে কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক সেখান থেকে পালিয়ে যান। ডেস্কে কর্মরত দুই জন নার্স অনবরত ফোন করে আগুনের বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানাতে থাকেন। এসির আগুন নীচে একটি বেডের ওপর পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন প্রকান্ড আকার ধারণ করে। ্ওই সময় আগুনের ধোঁয়া তাঁবুর দরজা দিয়ে করোনা ইউনিটে প্রবেশ করে। ওই সময় ইচ্ছা করলে ফায়ার স্টুইংগুইশার দিয়ে সহজে আগুন নিভিয়ে ফেলা যেতো। কিন্তু মেডিকেল তাঁবুতে কোনো ফায়ার স্টুইংগুইশার ছিল না। সেখানে অনেক দাহ্য পদার্থ ছিল। সেখানে নূন্যতম দুইটি ফায়ার স্টুইংগুইসার রাখা উচিত ছিল।

তৃতীয় গাফিলতি :

করোনা ইউনিটে মোট দুইটি কক্ষ। একটি কক্ষে ৫ জন রোগী ছিলেন। পাশেই একটি কক্ষ ছিল যেটার বাহিরের দরজা দিয়ে ওই কক্ষের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আগুন তাঁবুতে লাগার পর ছড়িয়ে পড়ার আগেই করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত নার্স ও এটেনডেন্সরা ইচ্ছা করলে পাশের কক্ষ দিয়ে ঢুকে রোগীদের সহজেই উদ্ধার করতে পারতেন। করোনা ইউনিটে বহির্গমন দরজা ছিল। সেটিও তারা ব্যবহার করেনি। তাঁবুতে আগুন ধরে যাওয়ার পর সেই ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে ওই ৫ রোগী মারা যায়।

এসব বিষয় নিয়ে গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত এক রোগীর আত্মীয়র দায়ের করা মামলাটি তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত রিপোর্টও হাতে চলে আসবে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ি ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে। মামলা তদন্তের জন্য আমরা ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৩৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তদন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

গত ২৭ মে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে অগ্নিকান্ডে রিয়াজুল আলম (৪৫), খাদেজা বেগম (৭০), এ্যান্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো: মাহাবুব এলাহী চৌধুরী হিরো (৫৭) নিহত হন। এ ঘটনার পর নিহত এ্যান্থনী পলের মেয়ের স্বামী রোনাল্ড নিকি গোমেজ বাদী হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৩০৪(ক) ও ১০৯ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলায় হাসপাতালের চেয়ারম্যান, এমডি, প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, দায়িত্বরত ডাক্তার নার্স, ও সেফটি সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামী করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়