শাহীন খন্দকার : [২] রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর বলছেন, গ্লাভস হাতে দিয়ে অনেকে ভাবে আমি-তো গ্লাভস পরে আছি। কিন্তু সে হাত দিয়েই যেভাবে সবধরনের জিনিস ধরেন, মুখ স্পর্শ করেন তেমনি গ্লাভস পরা অবস্থাতেও সেটি করছেন। তারপর রাস্তাঘাটে মাস্ক বা গ্লাভস ফেলে দিচ্ছেন। অনেক ব্যক্তির করোনা সংক্রমণ থাকলেও কোন লক্ষণ থাকে না। তিনি বলেন, সুরক্ষা বর্জ্য সঠিকভাবে না ফেলা মানে আমরা নিজেরাই নিজেদের ঝুঁকি তৈরি করছি।
[৩] করোনাভাইরাস সংক্রমণের সুরক্ষা সামগ্রী ফেলেদেয়া প্রসঙ্গে ডা. এএসএম আলমগীর বলছেন, সাধারণ মানুষ যেভাবে গ্লাভস, মাস্ক বাড়ির অন্যান্য আবর্জনার সাথে ফেলছেন বা রাস্তায়, হাসপাতাল চত্বরে ফেলে দিচ্ছেন সেটা খুবই অবৈজ্ঞানিক। তিনি আরো বলেন যারা ল্যাবে কাজ করেন নিজেরা কিছুক্ষণ পরপর অ্যালকোহল দিয়ে গ্লাভস পরিষ্কার করতে বলেন যাতে কোন ধরনের জীবাণু না থাকে।
[৪] আরো জানালেন যেহেতু বোঝার উপায় নেই কোন বাসা-বাড়িতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আক্রান্ত কেউ আছেন কিনা তাই এসব সামগ্রী জীবাণুমুক্ত করে তারপর ব্যাগে ভরে ব্যাগের মুখ বন্ধ করে তারপর ফেলাই উত্তম। কেননা দেশে প্রচুর মানুষ বর্জ্য থেকে পুনঃব্যবহার জন্য নানা সামগ্রী সংগ্রহ করেন। বর্জ্যের স্তূপ থেকে ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক ও গ্লাভস সংগ্রহ করছেন তারা, যা সংবাদমাধ্যমে এমন ছবি ছাপা হয়েছে।
[৫] তাই তিনি পরামর্শ দিয়ে জানালেন, গ্লাভস জীবাণুমুক্ত করার পর তা উল্টো করে খোলা উচিৎ। এরপর গ্লাভসগুলোকে যদি একটু কাঁচি দিয়ে কেটে দেয়া যায়, মাস্ক একটু আগুনে পুড়িয়ে ফেলা যায় তাহলে তা রিসাইকেল করে বিক্রি করা সম্ভব হবে না।
[৬] কেউ যদি পিপিই বা সার্জিক্যাল ক্যাপ ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রেও একই কাজ করা উচিৎ বলে পরামর্শ দিলেন সুস্থ্য থাকার লক্ষ্যে ডা. আলমগীর বলছেন ব্যবহৃত সুরক্ষাসামগ্রী আলাদা ব্যাগে ভরার কথা। কারণ এতে করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তা আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারবে।
[৭] কারণ বাড়িঘরের বর্জ্য ফেলতে প্রতিদিন নতুন ময়লার ব্যাগ ব্যবহার করা উচিৎ। বালতিতে রেখে সেটি ময়লার ভ্যানে তুলে না দিয়ে ব্যাগে ভরে, ব্যাগের মুখ গিট দিয়ে তবেই পাড়ার বর্জ্য সংগ্রহকারীকে দেয়া উচিৎ বলে এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পরামর্শ দিলেন। অফিসে আসা যাওয়ার পথে অনেক মাস্ক ও গ্লাভস রাস্তায় পরে থাকতে দেখছি।
[৮] হয়ত অনেকে ভাবছেন বাড়িতে ঢোকার আগে এগুলো ফেলে দিয়ে যাই। পরিবারের লোকদের কথা ভেবেই। কিন্ত আমাদের মনে রাখতে হবে ঐপথে যে আরো মানুষ যাতায়াত করেন তাই রাস্তায় যত্রতত্র ফেলা যাবেনা। চারপাশে সাধারণ মানুষ যখন এসব সুরক্ষা সামগ্রী প্রতিদিন ব্যবহারের পর ফেলে দিচ্ছেন তারা সেগুলো জীবাণুমুক্ত করেন না। সাধারণ বর্জ্যের মতোই ফেলে দেন। কিন্তু এটা খুবই ভুল হচ্ছে।