শেখ সেকেন্দার, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি : [২] মালয়েশিয়ায় বিদেশিদের দ্বারা পরিচালিত তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিলগালায় বিপদে পড়েছে বাংলাদেশিরা। সেই সঙ্গে রাজধানী কুয়ালালামপুর ও বিদেশি অধ্যুষিত জহর বারুরতে দেয়া হয়েছে নোটিশ। ইতোমধ্যেই সে দেশের সব থেকে বড় পাইকারি কাঁচাবাজারে বিদেশি অভিবাসীদের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে এবং সেখানে স্থানীয় নাগরিকদের কাজ করার জন্য লোভনীয় বেতনের ঘোষণা দেয় সে দেশের সরকার।
[৩] মালয়েশিয়ায় করোনা সংক্রমণ রোধে ১৮ মার্চ থেকে বিধি নিষেধ আরোপ করে সরকার। চলমান লকডাউনের মধ্যেই গত ৪ মে থেকে শর্ত সাপেক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়া হয়। তবে একই সময় অভিযান শুরু করে বিদেশিদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে, যা করোনার এ দুর্যোগকালে কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। আকস্মিক এ অভিযানে প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
[৪] মধ্যপ্রাচ্যের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সেখানে প্রায় ৮ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন। যাদের বড় অংশই শ্রমিক। অনেকেই ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত। অরেকটি অংশ, যারা সেকেন্ডহোম ও বিজনেস ভিসা নিয়ে ব্যবসা করছেন।
[৫] সরকারের কঠোর সিদ্ধান্তে এরই মধ্যে শিলগালা করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ৩ শতাধিক বাংলাদেশির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রজধানী কুয়ালালামপুর ও জহুর বারু সিটি কর্পোরেশন বিদেশিরা ব্যবসা পরিচালনায় জারি করেছে নিষেধাজ্ঞা। আর এ সময় গ্রেপ্তার হয়ে যারা কারাগারে আছেন, তাদের কালো তালিকায় ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
[৬] রাজধানী কুয়ালালামপুরের প্রাণকেন্দ্রে লইয়াট প্লাজা। ইলেকট্রনিক্স ও আইটিসামগ্রীর এ মার্কেট সারা মালয়েশিয়াতে সুপরিচিত। এ মার্কেটে প্রায় সাড়ে ৫’শ ইলেকট্রনিক্স দোকান ও আইটি সামগ্রীর শো-রুমের মধ্যে বাংলাদেশি মালিকানাধীন দোকান রয়েছে প্রায় ২৫-৩০টি। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন বাংলাদেশিরা। তবে মার্কেটটিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভালো চোখে দেখছে না অন্যান্য দেশের ব্যবসায়ীরা। মার্কেটের ম্যানেজমেন্ট চলমান করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশি শ্রমিক ও মালিকদের রীতিমতো বিভিন্ন শর্তের জালে আটকে রেখেছে।
[৭] সম্প্রতি মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের প্রধান দাতুক খায়রুল দাজায়মি দাউদ স্থানীয় গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কুয়ালালামপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিদেশি অভিবাসীরা ব্যবসা-বাণিজ্য খুলে পরিচালনা করছে, যা অভিবাসন আইনে অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলবে।
[৮] ১০ জুন থেকে সে দেশে সব ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তান সেরি মহিউদ্দিন ইয়াসিন। কিন্তু বাংলাদেশিদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান (বিশেষ করে মুদি দোকান) বহু দোকান খোলার অনুমতি পাচ্ছে না তারা। তবে যারা সে দেশের নাগরিকদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তাদের স্ত্রীরা যদি সবসময়ই দোকানে উপস্থিত থাকে তাহলে সমস্যা থাকছে না। কিন্তু যেসব বাংলাদেশি স্থানীয় নাগরিকদের নামে লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করছে তারা রয়েছে বেকায়দায়। সম্পাদনা : হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :