হাসান বিন বাংলা : বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার ৬-দফা, ঐতিহাসিক সেই মহেন্দ্রক্ষণ হলো ৭ জুন, ১৯৬৬। এই ছয় দফা ঘোষণার মাধ্যমেই মূলত পাকিস্তানি সামরিক চক্রের মরণ ঘণ্টা বেজে ওঠে। বাঙালি জাতি খুঁজে পায় তাদের মুক্তির ঠিকানা। অনেক বুদ্ধিজীবী (জনগণ বলে বুদ্ধিবেশ্যা) বলে থাকেন যে, বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের পরিবর্তে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এটি ঐতিহাসিক সত্য যে, বঙ্গবন্ধু এই ঐতিহাসিক ছয় দফার গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘ছয় দফা নয় বরং এক দফাই পেশ করলাম’। ছয় দফা ঘোষণা পরবর্তী সময়ে এর যৌক্তিকতা তুলে ধরতে পূর্ব ও পশ্চিমের আঞ্চলিক বৈষম্যের করুণ চিত্র দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হয়।
জনগণ পাকিস্তানি সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে শুরু করে। শুরু হয় পাকি রাজনীতিবিদ এবং সামরিক আমলাদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। ছয় দফা যে পাকিস্তানি শাসক চক্র মানতে পারবেনা এটা বঙ্গবন্ধু তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা দিয়ে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন। কারণ তারা যদি বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দাবি মেনে নিতো তবে পাকিস্তানের আরো যে কয়টি প্রদেশ আছে তারাও স্বাধীনতার দাবীতে আন্দোলনে নেমে পড়তো। ছয় দফা ছিল একটি রাজনৈতিক কৌশল মাত্র।
তাছাড়া, একটি স্বাধীন দেশে স্বাধীনতার দাবি তোলা মানেই ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন যা দেশদ্রোহীতার শামিল এবং বঙ্গবন্ধুর জন্য আত্মঘাতী। তাই, বঙ্গবন্ধু ছয় দফার মাধ্যমে মূলত এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করেন।
একদিকে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত করা অন্যদিকে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের নজির স্থাপন করা। অবশেষে এই ছয় দফার ধারাবাহিকতায় আসে ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন এবং ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং অতঃপর ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত গঙ্গা পাড়ি দিয়ে স্বাধীন -সার্বভৌম বাংলাদেশ, একটি মানচিত্র ও পতাকা। আজ এই ঐতিহাসিক ক্ষণে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরন করি ইতিহাসের রাখাল সম্রাট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :