সারওয়ার তুষার
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হলো সমস্ত রকমের ভিন্নমতকে স্তব্ধ করার ‘বৈধ’ নিপীড়নের হাতিয়ার। এমন একটা আইন বলবৎ থাকার সবচেয়ে ভয়াবহ দিকটি হলো, যেকোনো সময় যেকোনো ‘সরকারবিরোধী’ লেখা, এমনকি কোনো নিউজ লিংক শেয়ারের জন্যও এই আইনের খড়গ নেমে আসার শঙ্কা। এই আশঙ্কা আমাদের মস্তিষ্কে যে ‘জরুরি অবস্থা’ কায়েম করে রাখে, এই আইনের সম্ভাব্য প্রয়োগ আমাদের মনের উপর যে চাপ সৃষ্টি করে, তার ভয়াবহতার কোনো সীমা-পরিসীমা নাই।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধীতা আমরা শুধু এ কারণে করিনা যে , এই আইনে ‘অপপ্রয়োগ’ এর সুযোগ আছে কিংবা এটা কেবল সাংবাদিক-লেখক-শিল্পীদের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। বরং এই আইনের বিরোধীতা এই কারণে করি যে, এটা খোদ মানবীয় সত্তার বিরুদ্ধে এক ভয়াবহ ক্যু সংঘটিত করে চলেছে। যে ভাষা তথা চিন্তার ফলে মানুষ তার জৈবিক অস্তিত্বের ঊর্ধে উঠে রাজনৈতিক প্রাণী হয়েছে , যে ভাষার ফলে মানুষ ‘মানবীয় সত্তা’ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, এই আইন সেই মানবীয় সত্তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দার্শনিক দেকার্তে বলেছিলেন , ও ঃযরহশ ঃযবৎবভড়ৎব ও ধস. অর্থাৎ ‘আমি’ হওয়ার পিছনে এই চিন্তা তথা ভাষার অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং, মতপ্রকাশের অধিকার ,চিন্তার স্বাধীনতার অধিকারকে আমরা রাজনৈতিক শর্তের অধীন কিংবা সাংবিধানিক ব্যবস্থা হিশেবে বুঝতে চাইনা, খোদ মানবীয়তার ধারণার সাথে সম্পর্কিত করে বুঝতে চাই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চিন্তাকে ‘অপরাধ’ হিশেবে সাব্যস্ত করে, রাষ্ট্র চিন্তাপুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে এর বিরোধীতা করি আমাদের সমগ্র অস্তিত্ব দিয়ে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :