শিরোনাম
◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ

প্রকাশিত : ০৬ জুন, ২০২০, ০৬:৪০ সকাল
আপডেট : ০৬ জুন, ২০২০, ০৬:৪০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] শুধু ঢাকাতেই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত সাড়ে ৭ লাখের বেশি : ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

ডেস্ক রিপোর্ট  : [২] শুক্রবার আইসিডিডিআর,বির বরাত দিয়ে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে লন্ডনের ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। জাগো নিউজ

[৩] ইকোনমিস্ট বলছে, আইসিডিডিআর,বির কর্মকর্তা জন ক্লেমেনসের অনুমান, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেই করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ ছাড়িয়ে থাকতে পারে। তবে সরকারের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯১ জন; যাদের প্রায় অর্ধেকই ঢাকার।

[৪] ব্রিটিশ এই সাময়িকী বলছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জারিকৃত লকডাউনের বিধি-নিষেধের বেশিরভাগই গত সপ্তাহ থেকে তুলে নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারত। ১৭০ কোটি মানুষকে মুক্ত করে দেয়ায় বিপর্যস্ত অর্থনীতির এই অঞ্চলের এক পঞ্চমাংশ স্বস্তিতে ফিরবে। কিন্তু লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়ায় সংক্রমণ আবারও দ্রুতগতিতে বাড়তে পারে।

[৫] তিন দেশে সরকারিভাবে প্রকাশিত সাড়ে ৩ লাখের বেশি আক্রান্ত এবং প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু নিয়ে পরিসংখ্যানকে অপেক্ষাকৃত পরিমিত দেখাচ্ছে। তবে এখনও অনেক মানুষ আক্রান্ত হলেও গণনার বাইরে রয়েছেন; লকডাউন প্রত্যাহারের আগে থেকেই তা নিয়ে ভয় ছিল। এখন সেই ভয় আরও বাড়ছে।

[৬] বর্তমান ধারায় প্রতি দুই সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। তবে কিছু মডেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, এই অঞ্চলে করোনা সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাবে আগামী জুলাইয়ের শেষের দিকে। শুধু তাই নয়, সেই সময়ে সরকারি পরিসংখ্যানেও আক্রান্ত ৫০ লাখে পৌঁছাতে পারে এবং মৃত্যু ছাড়াতে পারে দেড় লাখ।

[৭] পাকিস্তানে কর্মরত বিদেশি এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারিভাবে করোনায় মৃত্যুর যে সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে, বাস্তবে মৃতের সংখ্যা তার দুই থেকে তিনগুণ বেশি। এই অঞ্চলের মারাত্মক আক্রান্ত অংশগুলোতে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তীব্র চাপের মধ্যে পড়েছে।

[৮] মুম্বাইয়ের থান শহরের ৪৬ বছর বয়সী নার্স মাধুরী এপ্রিলের শুরু থেকেই কোনও ধরনের ছুটি ছাড়াই হাসপাতালে টানা ১২ ঘণ্টা ডিউটি পালন করছেন। মে মাসে কোভিড-১৯ রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হন।

[৯] ভারতে রাজধানী দিল্লিতে অন্তত ৬০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন; যাদের মধ্যে ৩২৯ জনই দেশটির শীর্ষ মেডিক্যাল গবেষণা প্রতিষ্ঠান অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের। দেশটির সব অঞ্চলেই এখন দ্রুতগতিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে।

[১০] পাকিস্তানের চিকিৎসকরা বলেছেন, দেশটির হাসপাতালে পর্যাপ্তসংখ্যক শয্যা আছে বলে সরকার যে দাবি করছে, তা একেবারে ভিত্তিহীন। পাকিস্তান মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের নেতা কায়সার সাজ্জাদ বলেন, পরিস্থিতি খুব, খুবই বাজে।

[১১] করোনা সঙ্কটের কারণে ইতোমধ্যে এই অঞ্চলের অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়েছে। ভারতে প্রত্যেক বছর যক্ষায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ মারা যায়; করোনা সঙ্কট শুরুর পর এই রোগের চিকিৎসাও থমকে গেছে।

[১২] অঞ্চলটির ধনীরা স্বাভাবিক সময়ে দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নেন। কিন্তু বর্তমানে সেই উপায় নেই। ঢাকার বেসরকারি একটি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক ইকোনমিস্টকে বলেছেন, একটু বেশি হাঁচি হলেই তারা (ধনীরা) থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর অথবা ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতেন। কিন্তু বর্তমানে কোভিড-১৯ বা অন্যান্য অসুস্থতা নিয়েও দেশের অভিজাত হাসপাতালগুলোতেও তাদের ভর্তি হওয়া প্রায় অসম্ভব।

[১৩] মর্গে, কবর স্থানে এবং শ্মশানঘাটে জায়গা খুঁজে পাওয়াও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার উপকণ্ঠে নারায়ণগঞ্জের একটি পৌরসভার কবরস্থানে স্বাভাবিক সময়ে আড়াইশর মতো মানুষকে দাফন করা হয়। কিন্তু গত মাসে এই কবরস্থানে ৫৭৫ জনকে দাফন করা হয়েছে; যাদের মধ্যে মাত্র ৭০ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন বলে সরকারি হিসেবে বলা হয়েছে।

[১৪] বন্দরনগরী চট্টগ্রামে কবর খনন কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফরিদ উদ্দিন বলেন, কারণ যাই হোক না কেন, ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অশ্রুসজল চোখে তিনি বলেন, গত চারদিন ধরে তিনি এবং তার দলের সদস্যরা ঘুমানোর সময় পাচ্ছেন না। ফরিদ বলেন, অনেক বেশি মৃত্যু। আমাদের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে। দয়া করে আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন যেন সৃষ্টিকর্তা আমাদের ক্ষমা করে দেন এবং রোগটিকে তুলে নেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়