আবদুন নূর তুষার
উটপাখি বালুঝড়ের সময় ভয় পেয়ে বালুতে মুখ গুঁজে থাকে। আমরা ভাবি এটা বোধহয় বোকামি। এটার পুরোটাই ভুল জানি আমরা। উটপাখি সারাদিনে বহুবার বালুতে মুখ গুঁজে। এটাই তাদের নেস্ট যেখানে তারা ডিম পাড়ে এবং বালুঝড়ের সময় ডিম বাঁচাতে সে সেখানে মাথা গুঁজে হয়তো। কিন্তু বিপদের মুখে উটপাখি হয় লড়ে অথবা দৌড় দিয়ে সরে যায়। তার গতি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার। উটপাখি তাই মুখ লুকায় না, সাবধান হয়। ডিম বাঁচানোর জন্য মুখ গুঁজে। কিন্তু বিপদ বেশি হলে জোরে দৌড় দেয়। এটাও তার সাবধানতার অংশ। অর্থাৎ সে কোনো বিপদকে অস্বীকার করে না। সে যখন যা দরকার সেটা করে। প্রকৃতপক্ষে বাগধারায় আমরা উটপাখির শারিরীক ভঙ্গটিকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করি, মাথাগোঁজার কারণটিকে না। তাই কেবল মাথাগোঁজা শিখি, কিন্তু সেটা দিয়ে কোনো কাজ হয় না। কেবল চক্ষুকর্ণ বন্ধ হওয়া ছাড়া। মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো তার অবস্থানকে ভালোবেসে ফেলা। তার অবস্থান টিকিয়ে রাখার জন্য সে অস্বীকারের সংস্কৃতি তৈরি করে। এই অবস্থান হলো তার বড় সাধের উটের ডিম। এই ডিম বাঁচাতে সে মাটিতে মুখ গুঁজে। অস্বীকারের সংস্কৃতি বিরাট বিপদ। সুইডেন মডেল, সুইডেন মডেল বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছিলেন কিছু লোক।
সুইডেনের প্রধান রোগতত্ত্ববিদ প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে তিনি ভুল করেছিলেন। সব খুলে রেখে তিনি মানুষকে বিপদগ্রস্ত করেছেন। কেন ভুল স্বীকার করলেন? কারণ ভুল স্বীকার করলে ভুল শুধরানো যায়। যারা ডিনায়ালে থাকেন তারা কেবল সেই ভুলকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আরেকটা ভুল করেন। উটপাখি হলে, তার কাছ থেকে প্রকৃত সাবধান হওয়াটা শেখেন, কেবল মুখ বালুতে গোঁজা শিখলে চলবে না।
আপনার মতামত লিখুন :